সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসির একটি নির্বাহী আদালত। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের বিভাগীয় বিচারক জন বাতেস এ রায় দিয়েছেন। এর আগে ২০২০ সালে সালমানের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করেছিলেন খাশোগির বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিজ।
তবে বিচারক জন বাতেস জানান, প্রিন্স সালমানের বিরুদ্ধে মামলাটি খারিজ করতে চাননি। কিন্তু যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সালমানকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি হওয়া থেকে রেহাই’ দিয়েছে, তাই মামলা খারিজ না করা ছাড়া তার অন্য কোনো উপায় ছিল না।
দি নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৫ পাতার রায়ে বিচারক জন বাতেস লিখেছেন, ‘আদালতের আপত্তি সত্ত্বেও, মোহাম্মদ বিন সালমানের সৌদি আরবের নতুন দায়িত্ব পাওয়া (প্রধানমন্ত্রী হওয়া) এবং জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওই সময় তার জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আদালতকে জানিয়েছে যুবরাজ সালমানকে বিচারের মুখোমুখি করা যাবে না।’
এর আগে তুরস্কের নাগরিক হাতিস চেঙ্গিজকে বিয়ে করতে ২০১৮ সালে তুরস্কে এসেছিলেন জামাল খাশোগি। তিনি বিয়ে সংক্রান্ত কাগজপত্র আনতে সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন। সেখানেই নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয় তাকে।
দি গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাংবাদিক জামাল খাশোগি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে সৌদির রাজ পরিবারে সমালোচনা করে বিভিন্ন কলাম লিখতেন। ধারণা করা হয়, এ কারণে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন যুবরাজ সালমান। ফলে তাকে হত্যা করতে ছক কষেন তিনি। এরপর সুযোগ বুঝে ২০১৮ সালে সালমানের সরাসরি নির্দেশে একটি হিট স্কোয়াড তুরস্কে অবস্থিত সৌদি আরবের দূতাবাসে খাশোগিকে হত্যা করে তার মরদেহ গলিয়ে ফেলে। তবে সালমান শুরুর দিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু পরবর্তীতে জানান, হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ না দিলেও তার নজরে ছিল এ ঘটনা।
এদিকে, চলতি বছরের গত সেপ্টেম্বর মাসে এক রাজকীয় ডিক্রির মাধ্যমে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ। মূলত খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিচার থেকে বাঁচতে তাকে প্রধানমন্ত্রী বানানো হয় হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।