পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান খেলার মাঠকে যাতে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার না করা হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও গাড়ি চালকদের পুন:প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পার্ক মানে পার্কই। খেলার মাঠ মানে খেলার মাঠই। সেখানে স্কুল-কলেজের শিক্ষারথীরা এসে খেলতে পারবে। সেখানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করা দরকার নেই। যেমনটা ধানমন্ডিতে করা হয়েছে। সেখানে সব কয়টিকে প্রাইভেট ক্লাবকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। এই ক্লাবগুলো মুখে বলে, সকলের অ্যাকসেস আছে। আদতে সকলের অ্যাকসেস সেখানে নেই। এগুলাতো সবার জন্য ফ্রি থাকা উচিত বলে আমি মনে করি।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, পার্ক-খেলার মাঠে সবার প্রবেশাধিকার আছে। সেখানে কোনো রকমের অসামাজিক কাজ যাতে না ঘটে, সেটার জন্যও ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে সেখানে প্রবেশে বাধার দেয়া যাবে না।
অনুষ্ঠানে ডিসেম্বরের মধ্যেই শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালাকে আইনে রূপান্তর করে গেজেট প্রকাশ করা হবে বলে জানান পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা।
তিনি বলেন, তাতে ক্ষমতা দেয়া হবে পুলিশকে। হর্নের শব্দে সচিবালয়ে কাজ করা দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। ঢাকা একটি নরকে পরিণত হচ্ছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বিদেশে হর্ন দেয়া মানে হলো গালি দেয়া। রাজধানীতে যতগুলো সোসাইটি আছে পর্যায়ক্রমে সবাইকে এ প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। হর্নের যন্ত্রণায় মানুষ বিকার গ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। শব্দ দূষণের কারণে একটা অস্থির প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে।
ঢাকার ১০টি এলাকায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে জানিয়ে রিজওয়ানা বলেন, সবাই সচেতন হলে শব্দদূষণমুক্ত একটি বাসযোগ্য শহর গড়া সম্ভব।
তিনি বলেন, ঢাকার খালগুলোকে বাঁচানোর জন্য এনজিওগুলোর কাছ থেকে পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। একটি ব্যয়সাশ্রয় পরিকল্পনা এ মাসের মধ্যেই পাওয়া যাবে।
রিজওয়ানা বলেন, সরকারের পক্ষে ধান লাগানো সম্ভব না, এটা কৃষককেই করতে হবে। সরকারের পক্ষে মাছ ধরা সম্ভব নয়, এটা জেলেকেই করতে হবে। গুলশানের যে বাসিন্দা, তাদেরকেই পার্ক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে হবে। তবে এই ব্যবস্থাপনায় কোনো গোষ্ঠীকে উপকৃত করে অন্য সকলের অভিগম্যতা বা অ্যাকসেস বন্ধ করে না। এটা পাবলিকের টাকায় করতে হবে।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের বিভাগীয় শহরগুলোতে জরিপ করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এতে রাজধানীতে সর্বোচ্চ শব্দদূষণ হয় ১২৯ দশমিক ৪ ডেসিমাল আর সর্বনিম্ন ৩০ দশমিক ৭ ডেসিমাল।