সরকারি চাকরির ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন জনসাধারণ।
এ সময় মহাসড়কের রাস্তায় শিক্ষার্থীদের ফুটবল খেলতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র বহাল রাখার দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ৩টা থেকে বেলা ৬টা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহন যাওয়ার সুযোগ করে দেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের উপর বসে শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী নানা স্লোগান দিচ্ছেন। কয়েকজন গাছের গুড়ি রাস্তার নেওয়ার কাজে ব্যস্ত, কেউ কেউ একসঙ্গে বসে গল্পে মেতেছেন। আবার পিচঢালা রাস্তায় কয়েকজন মিলে ফুটবল নিয়ে চোর পুলিশ খেলছেন। অন্যান্য দিন নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম থাকলেও আজ উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এ আন্দোলন বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং সাম্যের পক্ষে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছে ১৯৫২-তে এবং ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করতে হচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাকরি ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী চাকরি না পাওয়ার হতাশায় আত্মহত্যা করছে। অথচ কোটা বহাল রেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে অথচ সেই বৈষম্য আজও রয়ে গেছে।তাই কোটা বাতিলের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ জেগে উঠেছে। আমরা বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কার চাই।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সায়েম বলেন, কোটার সংস্কার করা জরুরি। কারণ এর ফলে চাকরির সেক্টরগুলোতে মেধাবীদের থেকে কম যোগ্যতার লোকবল নিয়োগ পাবে। এতে দেশ পিছিয়ে যাবে।
নারী শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার বলেন, আমি একজন নারী হয়ে নারী কোটা বাতিলসহ সকল কোটার সংস্কার চাই। আসলে কোটা অনগ্রসররা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু কোটা কারা ভোগ করছে এটা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে। আমি চাই মেধার মূল্যায়ন করে চাকরির সুযোগ দেওয়া হোক।