দৈনিক শিক্ষাডটকম, জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের কালাইয়ে পুনট ইউনিয়নে শিকটা এজিইউ দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসার ল্যাব সহকারী গবেষণাগার সহকারী পদে লোকবল নিয়োগে গোপনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অভিযোগ উঠেছে। ফলে সংশ্লিষ্ট পদে আবেদন করা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এলাকার আগ্রহী প্রার্থীরা। গত ১১ মার্চ এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির পত্রিকা মাদরাসা এলাকায় না আসায় নিয়োগের বিষয়টি জানেন না কেউ। এমনকি মাদরাসার নোটিশ বোর্ডেও নেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির খবর। এর মধ্যেই আবেদনের সময়সীমা শেষ হওয়ায় পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই এলাকার শিক্ষিত ও যোগ্য বেকার যুবকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদরাসার সভাপতির বউকে নিয়োগ দেয়ার উদ্দেশেই গোপনে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মার্চ দৈনিক আন্ডারগ্রাউন্ড ও দৈনিক মুক্ত সকাল পত্রিকায় এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এতে ল্যাব সহকারী/গবেষণাগার সহকারী পদে একজনের আবেদন চাওয়া হয়।
প্রত্রিকাগুলো এ এলাকায় না চলায় লোকবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পত্রিকাটি এ এলাকায় আসেনি। স্থানীয় কারো চোখেও পড়েনি। এমনকি স্থানীয় কোনো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি। মাদরাসার নোটিশবোর্ডেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। এ ছাড়া মাদরাসার অধিকাংশ শিক্ষকরা নিয়োগ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সকল নিয়োগ গোপনে করেছেন সুপার আব্দুল কাইয়ুম। এসব নিয়োগ তার আত্মীয়-স্বজন ও মনোনীত প্রার্থীকে দেয়া হয়েছে। এমপিওভুক্ত এ মাদরাসার নিয়োগ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কোনো তথ্য অবগত নন এলাকাবাসী। সুপারের নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য এলাকাবাসীকে ফাঁকি দিয়ে চালাচ্ছেন মাদরাসার সার্বিক কর্মকাণ্ড। এ ছাড়া এলাকার সুধী সমাজের আপত্তি উপেক্ষা করে মাদরাসার লাখ লাখ টাকা সহজেই আত্মসাৎ করতে সুপারের পকেটের লোকজন দিয়ে বারবার ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় শিকটা এজিইউ আ. গফুর দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসা।
গত ২৫ মার্চ সরেজমিনে গিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি নোটিশ বোর্ডে বা মাদরাসার আশেপাশের কোনো বিলবোর্ডেও ছিলো না।
মাদরাসায় নিয়োগ পেতে আগ্রহী স্থানীয় প্রার্থীদের অনেকেই জানান, কখন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় তা আমরা জানি না। যখন নিয়োগ চূড়ান্ত হয়ে লোকবল ওই মাদরাসায় কর্মরত হন, আমরা তখন জানি যে মাদরাসার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এর আগেও যে ৪ জন কর্মচারী নিয়োগ হয়েছে তাও অতি গোপনে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সুপারের যোগসাজশে সম্পন্ন হয়েছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে মাদরাসা সুপার আব্দুল কাইয়ুম জানান, সমস্ত বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই (১১ মার্চ) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। জাতীয় ও স্থানীয় একটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কোন কোন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন পত্রিকার নাম মনে করে বলতে পারেননি।
মাদরাসার সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোর্শেদুল জানান, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। নিজের বউকে উক্ত পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তিটি গোপন করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁ আমার বউও আবেদন করেছেন। করতে পারবে না এমনতো কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ওই মাদরাসার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগও পাইনি। আপনি সুপারের সঙ্গে কথা বলেন।