গ্রাম-চরাঞ্চলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিস্তৃতি বাড়ানোর উদ্যোগ - দৈনিকশিক্ষা

গ্রাম-চরাঞ্চলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিস্তৃতি বাড়ানোর উদ্যোগ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিস্তৃতি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বর্তমানে দেশে এ ধরনের ৬৫ হাজার ৫৬৬টি স্কুল রয়েছে। এর সঙ্গে আরও যুক্ত হবে সহস্রাধিক বিদ্যালয়। নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়বিহীন গ্রাম, হাওর এবং চরাঞ্চলকে গুরুত্ব দেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ১৮ এপ্রিল নতুন স্কুল স্থাপনের আবেদন চেয়ে সব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (৪ মে) আমাদের সময় পত্রিকায় প্রকশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন এম এইচ রবিন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানান, দেশের চরাঞ্চলে নতুন করে এক হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। চলতি অর্থবছরে ২০টি চরে নতুন করে বিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মন্ত্রীর এই ঘোষণার পর স্কুলের চাহিদাপত্র পাঠাতে শুরু করেছেন বিভিন্ন জেলার সংসদ সদস্যরা।

প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে সংবিধানে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার অঙ্গীকার সন্নিবেশ করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক ঘোষণা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ এবং ১,৫৭,৭২৪ শিক্ষকের চাকরি সরকারীকরণ করেন।’

প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে বর্তমান সরকারের আমলে ২৬ হাজার ১৯৩টি স্কুলকে জাতীয়করণ ও প্রধান শিক্ষকের পদমর্যাদা বাড়ানোর পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল বাড়ানো হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতির ক্ষেত্রে এটি আরেকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত আমরা নিচ্ছি, সেটি হচ্ছে বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় আরও সহস্রাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকার স্থাপন করবে। এজন্য বিদ্যালয়বিহীন গ্রাম, হাওর এবং চরাঞ্চলকে গুরুত্ব দেবে সরকার।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন অনুবিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারের উদ্যোগ হচ্ছে যেখানে এখনো বিদ্যালয়বিহীন গ্রাম আছে- এসব এলাকায় স্কুল প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু রাজনীতিকদের চাপ থাকে তার এলাকা বা বাড়ির কাছে স্কুল স্থাপনের। অনেক সংসদ সদস্য চাহিদা পত্র দিচ্ছেন, সে অনুযায়ী বিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণ করতে পারবে না মন্ত্রণালয়। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক চাহিদারভিত্তিতে অনেক জেলায় জাতীয়করণ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন কাক্সিক্ষত শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। কিন্তু সরকার চাইলেও এখন এ ধরনের বিদ্যালয় বন্ধ করতে পারছে না।

নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, কোনো রাজনৈতিক চাহিদার ভিত্তিতে নয় বাস্তবসম্মত চাহিদার যথাযথ শর্ত পূরণ করে যেসব এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই, সেসব এলাকায় বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।

যেসব শর্ত মেনে নতুন বিদ্যালয় স্থাপন : নতুন স্কুল স্থাপনের আবেদন করতে উপজেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যবিবরণী, কমিটির সুপারিশ, নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয় দূরত্ব ও শিক্ষার্থী সংখ্যা, দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে কি-না সে তথ্য, দুই কিলোমিটারের মধ্যে প্রাইমারি স্কুল থাকলেও সেক্ষেত্রে প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা আছে কি-না বা অন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কি-না, প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ের গ্রামে অন্য কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে কি-না, গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও প্রস্তাবিত স্কুল থেকে অবস্থান কত দূরে, প্রস্তাবিত স্কুলের চারপাশের বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকা চিহ্নিত করে ক্যাচমেন্ট এলাকা নির্ধারণ, প্রস্তাবিত স্কুলের জমি আছে কি-না, জমি না থাকলে বিকল্প প্রস্তাব কি, স্কুলের জন্য জমি বা প্রতিশ্রুত জমি থাকলে তার অবস্থা কেমন, প্রস্তাবিত স্কুলের গ্রাম বা মৌজার জনসংখ্যা কত, ক্যাচমেন্ট এলাকার জনসংখ্যা কত, প্রস্তাবিত স্কুলের ক্যাচমেন্ট এলাকায় ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত ইত্যাদি তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে নতুন স্কুল স্থাপনের আবেদন করতে হবে।

এ বিষয়ে গত ১৮ এপ্রিল নতুন স্কুল স্থাপনের আবেদন চেয়ে সব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের উপপরিচালক ইমামুল হকের সই করা চিঠিতে আগামী ১৮ মের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথিসহ আবেদন করতে বলা হয়েছে।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034129619598389