সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর জনতা ব্যাংক শাখার পিয়ন রঞ্জু আকন্দের বিরুদ্ধে শতাধিক গ্রাহকের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (৯ জুন) সকালে জনতা ব্যাংক শাহজাদপুর শাখায় শতাধিক গ্রাহক তাদের জমাকৃত অর্থ ব্যাংক হিসেবে দেখতে না পেয়ে ব্যবস্থাপকের কার্যালয় ঘেরাও করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে শাখাটির ব্যবস্থাপক পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
অভিযুক্ত রঞ্জু আকন্দ শাহজাদপুর পৌরসভার পাড়কোলা মহল্লার মৃত নুরুল আকন্দের ছেলে। তিনি উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে যেটা জেনেছি তারা ব্যাংকের পিয়নের কাছে বিভিন্ন সময়ে টাকা জমা দিতেন। তবে অভিযুক্ত রঞ্জু জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের সই-সিলসহ স্লিপ দিলেও ব্যাংক হিসেবে সেই টাকা জমা দেননি।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। তবে অভিযুক্তকে আটকের চেষ্টা চলছে।
ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের জমাকৃত অর্থ নিজের কাছে রেখে ব্যাংকের সিল-সইসহ রিসিভ কপি দিয়ে দিতেন পিয়ন রঞ্জু আকন্দ। কখনো গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করতে এলে চেক জমা রেখে নিজের কাছে রাখা টাকা দিতেন। এভাবে প্রবাসীদের লাখ লাখ টাকা ব্যাংকে জমার কথা বলে নিজের কাছে রেখে দিতেন। কখনো ব্যাংকে গিয়ে তার কাছে টাকা জমা দিলেও হিসাব নম্বরে জমা দিতেন না। এভাবে প্রতারণা করে শতাধিক গ্রাহকের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন পিয়ন রঞ্জু আকন্দ।
তারা আরও জানান, রঞ্জু চুক্তিভুক্ত পিয়ন হয়েও রহস্যজনক কারণে ব্যাংকের মূল ফটকে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসতেন। সেখানে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লেনদেন করলেও ব্যাংকের কেউ প্রতিবাদ করেননি। রঞ্জু সবসময় নিজেকে জনতা ব্যাংকের এমডি আব্দুস সালামের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এসব অপকর্ম চালিয়ে যেতেন।
পলাতক থাকায় এ বিষয়ে অভিযুক্ত রঞ্জু আকন্দের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শাহজাদপুর জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক জেহাদুল ইসলাম বলেন, ‘পিয়ন রঞ্জু আকন্দ ব্যাংকের নকল সিল তৈরি করে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেছে। সে ব্যাংকের এমডির আত্মীয় পরিচয় দিয়ে আমাদের সবাইকে জিম্মি করে এ অপকর্ম করেছে।’