ঘুষ নিয়ে মামলায় হেরে কোটি কোটি টাকা জরিমানার খাঁড়ায় এনসিটিবি!! - দৈনিকশিক্ষা

বেক্সিমকোর সঙ্গে চেয়ারম্যান-সচিবের গাঁটছড়া!ঘুষ নিয়ে মামলায় হেরে কোটি কোটি টাকা জরিমানার খাঁড়ায় এনসিটিবি!!

সাবিহা সুমি, আমাদের বার্তা |

বিতর্কিত শিল্প-বাণিজ্য গ্রুপ বেক্সিমকোর মালিকানাধীন তিনটি প্রকাশনা ও মুদ্রণ সংস্থার কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে মামলায় হেরে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকবোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এতে সরকার তথা পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে জরিমানা গুণতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, ৫ আগস্টের পর বেক্সিমকোর মালিকানাধীন ফ্রি প্রেস, শুকতারা ও পুস্তকা লিমিটেড এর সঙ্গে প্রায় দুই যুগ ধরে চলে আসা কয়েকটি মামলার নথি গায়েব করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর এনসিটিবির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান, সচিব, ভান্ডার ও আইন শাখার কয়েকজনের দিকে। শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

গত কয়েক বছরের ঘটনাপ্রবাহে দেখা যাচ্ছে, সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিভিন্ন পদে এনসিটিবিতে ছিলেন। সর্বশেষ গত চারবছর ধরে তিনি নিয়মিত ও চুক্তিভিত্তিক চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে তিনি অফিসে যাওয়া বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যান। 

এমন পরিস্থিতিতে গত ৩১ আগস্ট অধ্যাপক রিয়াজুল হাসানকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া সচিব পদে ছিলেন দীপু মনি গংয়ের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত শিক্ষা ক্যাডারের মোসা. নাজমা আখতার। ৫ আগস্টের পর তিনিও কিছুদিন পলাতক ছিলেন। পরে তাকে টাঙ্গাইলের একটা সরকারি কলেজে বদলি করে দেওয়া হয়। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেছেন, ৩ ও ৪ আগস্ট থেকেই ফরহাদুল ও নাজমা আখতার বোর্ডের কিছু কিছু ফাইল বাড়িতে বসে দেখার নাম করে নিয়ে গেলেও সেগুলো আর আনেননি। বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া কয়েকটি ফাইলের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় কোম্পানিকে বইছাপার কাজ দেওয়া সংক্রান্ত ও বেক্সিমকোর তিনটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘ বছরের মামলার কাগজপত্র।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এনসিটিবি বনাম পুস্তকার সঙ্গে ঢাকার জেলা জজ আদালতে চলা ৪১৬/২০১৮ নং আরবিট্রেশন মামলাটিতে পাঠ্যপুস্তকবোর্ডকে হারিয়ে দেওয়া হয়। এনসিটিবি হেরে যাওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হন তৎকালীন চেয়ারম্যান, সচিব, ভান্ডার ও আইন শাখার কর্তারা।  মামলার রায় ঘোষণা হয় গত বছরের ৫ এপ্রিল। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে শেষ দিকে হঠাৎ করে ২০০১ শিক্ষাবর্ষের সব পাঠ্যবই ছাপার পুরো টেন্ডার দেওয়া হয় বেক্সিমকোর এই তিন প্রতিষ্ঠানকে। অথচ পাঠ্যবই ছাপার বিষয়ে তাদের কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না। সময়মতো বই দিতে না পারায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় কোটি শিক্ষার্থীকে। জানুয়ারির ১ তারিখে দেওয়ার কথা থাকলেও আগস্ট মাসেও বই দিতে না পারায় অভিভাবকরা বইয়ের দাবিতে হরতাল, রাজপথ আটকে মিছিল ও অবস্থান ধর্মঘট করেন।

দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তপন কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক সভায় ডিফল্টার ওই তিন প্রতিষ্ঠানের ছাপা সংক্রান্ত কাজের জন্য অগ্রীম টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অগ্রীম টাকা চেয়ে বেক্সিমকোর আবেদনে বলা হয়েছে, অর্থাভাবে তারা বই বাইন্ডিং ও পরিবহন করতে পারছেন না। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ১০ অক্টোবর বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায় এসে ওই তিন প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে দেওয়া অগ্রিম টাকা উদ্ধার ও সময়মতো বই দিতে ব্যর্থতায় জরিমানা করার উদ্যোগ নেয়।

যদিও এনসিটিবিকে গত বছরের এপ্রিলে জেলা ও দায়রা জজ আদালত কত কোটি টাকা জরিমানা করেছে তার পরিমাণ জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ভান্ডার ও আইন শাখার কর্তারা। তারা দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছেন, জরিমানা মওকুফ চেয়ে এনসিটিবির পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়েছে গত বছরই। 

এনসিটিবির একজন সাবেক সদস্য বলেছেন, আইন ও ভান্ডার শাখার কর্তাদের মামলায় জেতার চাইতে হারলে লাভ বেশি। যত বছর মামলা চলবে ততবছর তারা ফি পাবেন। উল্টো প্রতিপক্ষের কাছ থেকে টাকা পেয়ে মামলার শুনানিতে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ হাজির না করে এনসিটিবিকে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পুরনো।        

তবে মামলার ফাইল গায়েব ও ইচ্ছাকৃত মামলায় হেরে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন সাবেক চেয়ারম্যান ফরহাদুল ইসলাম ও নাজমা আখতার। দৈনিক আমাদের বার্তার প্রশ্নের জবাবে তারা দাবি করেছেন, সব ব্যর্থতার দায় আইন ও ভান্ডার শাখার। 

আর ভোগান্তি নয়, ঘরে বসেই আয়কর দিন: প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha আর ভোগান্তি নয়, ঘরে বসেই আয়কর দিন: প্রধান উপদেষ্টা এইচপিভি টিকা নিয়ে অসুস্থ ২০ ছাত্রী - dainik shiksha এইচপিভি টিকা নিয়ে অসুস্থ ২০ ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষা মধ্য এপ্রিলে, জুনের শেষে হতে পারে এইচএসসি - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষা মধ্য এপ্রিলে, জুনের শেষে হতে পারে এইচএসসি রুয়েটে ১০ দিন ক্লাস না করলে ছাত্রত্ব বাতিল - dainik shiksha রুয়েটে ১০ দিন ক্লাস না করলে ছাত্রত্ব বাতিল প্রথম দিনের ভাইভায় যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন প্রার্থীরা - dainik shiksha প্রথম দিনের ভাইভায় যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে হাসনাত-সারজিসের রিট - dainik shiksha আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে হাসনাত-সারজিসের রিট কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ঘুষ নিয়ে মামলায় হেরে কোটি কোটি টাকা জরিমানার খাঁড়ায় এনসিটিবি!! - dainik shiksha ঘুষ নিয়ে মামলায় হেরে কোটি কোটি টাকা জরিমানার খাঁড়ায় এনসিটিবি!! please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032320022583008