ঘোড়া। এটি খুড়ওয়ালা স্তন্যপায়ী প্রাণী। ঘোড়া মানুষের সম্পর্ক বহুযুগ ধরে। ৪০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ মানুষ ঘোড়াকে ঘরে পোষা শুরু করে। ঘোড়া দ্রুতগামী চতুষ্পদ প্রাণী। যার পিঠে চড়া যায়। দ্রুতগামী বলে এর নাম তুরগ, তুরঙ্গম। ইসলামের ইতিহাসেও ঘোড়ার প্রদ্ধি ব্যাপক। প্রশ্ন ওঠে ঘোড়ার গোশত খাওয়া যাবে কী না।
ঘোড়ার গোশত খাওয়া জায়েজ আছে। কিন্তু গণহারে ঘোড়ার গোশত খেলে জিহাদের সময় ঘোড়ার মাধ্যমে খেদমত নিতে সমস্যা হতে পারে। তাই ঘোড়ার গোশত খাওয়া মাকরুহ।
ঘোড়ার মাংস কি হালাল
ঘোড়ার গোশত খাওয়া জায়েজ আছে। ঘোড়ার গোশত হালাল। কিন্তু গণহারে ঘোড়ার গোশত খেলে জিহাদের সময় ঘোড়ার মাধ্যমে খেদমত নিতে সমস্যা হতে পারে। তাই ইমাম আবু হানিফা রহ. বলেছেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়া মাকরুহ। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৫-২৯০)
ঘোড়ার মাংস খাওয়া হালাল না হারাম
বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে যদিও ব্যাপকভাবে ঘোড়ার ব্যবহার হয় না, কিন্তু তা একেবারে বন্ধও হয়ে যায়নি। এখনো অনেক দেশের সিকোরিটি ফোর্সেস তাদের কেন্দ্রগুলোতে ঘোড়ার রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। নিয়মিত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।
তাছাড়া হাদিস শরিফে এসেছে, হযরত খালিদ ইবনে ওলিদ রা. বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে নাসাঈ ৮/২০৬; সুনানে আবু দাউদ ২/৫৩১) নিষিদ্ধ হওয়ার মূল সূত্র হচ্ছে এ হাদিস। আর জিহাদের কাজে ব্যবহার হওয়ার বিষয়টি একটি প্রাসঙ্গিক দলিলমাত্র। অতএব জিহাদের কাজে ঘোড়ার ব্যবহার একেবারে বন্ধ হয়ে গেলেও তা খাওয়া উপরোক্ত হাদিসের কারণে মাকরূহ তানযীহি থাকবে। (আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/১৮৩, ১৮৪; বুখারি ২/৬০৬; মুসলিম ২/১৫০; সুনানে আবু দাউদ ২/৫৩১; দারা কুতনী ৪/২৮৭; উমদাতুল কারী ১৭/২৪৮; বাযলুল মাজহূদ ১৬/১১৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৪৯; ইলাউস সুনান ১৭/১৪৩; ফাতহুল কাদীর ৮/৪১৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ১৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯০; মুলতাকাল আবহুর ৪/১৬২; আযযখীরাহ ৪/১০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩০৫)
তবে সাধারণ সময়ে ঘোড়ার গোশত খেতে কোনো সমস্যা নেই। হযরত জাবের রা. বলেন, খায়বারের যুদ্ধে রসুল সা. গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন, ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন (বুখারি ৫৫২০; মিশকাত ৪১০৭)।
রসুল সা. ব্যাপকহারে মানুষ ঘোড়ার জবাই করে গোশত খেলে যুদ্ধের সময় ঘোড়া পাওয়া যাবে না। তাই ঘোড়ার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন মহানবী সা.। যদি এমন কোনো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভবনা না থাকে তাহলে ঘোড়ার গোশত খাওয়াতে কোনো সমস্যা নেই।