বিগত বছরগুলোর তুলনায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে উচ্চ মাধ্যমিকে পাসের হার কমলেও বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
শিক্ষা বোর্ড সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সাত বিষয়ে পরীক্ষা এবং বাকি বিষয়গুলোতে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন হওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলে প্রভাব পড়েছে। আবার মানবিকে পাসের হার কম হওয়ায় বিষয়টিও সার্বিক ফলাফলে প্রভাব রেখেছে।চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ, গতবার ছিল ৭৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, “সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের একটা প্রভাবতো এখানে পড়েছে। কারণ এসএসসিতে কোনো কোনো শিক্ষার্থী খুব ভালো করলেও এইচএসসিতে খারাপ করতে পারে। আবার এসএসসিতে খারাপ করে এইচএসসিতে ভালো করারও অনেকের সম্ভাবনা থাকে।”
আর পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে প্রতিবারের মত এবারও সামগ্রিক ফলাফলে একটা প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন বোর্ড চেয়ারম্যান।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবছর চট্টগ্রাম বোর্ডে এক লাখ ছয় হাজার ২৯৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এক লাখ পাঁচ হাজার ৪১৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তার মধ্যে পাস করেছে ৭৪ হাজার ১২৫ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার ২৬৯ জন শিক্ষার্থী।
চট্টগ্রাম বোর্ডে এবার বিজ্ঞান বিভাগে সর্বোচ্চ ৯১ দশমিক ৩৩ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছে; ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং মানবিক বিভাগে পাসের হার ৫৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
কোভিড মহামারীর পর গতবছরই প্রথমবার পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা হয়েছিল। আর এ বছর সাতটি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়ার পর বাকিগুলো আর নেওয়া সম্ভব হয়নি ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং সরকার পতনের পরের ঘটনাপ্রবাহের কারণে।
যে পরীক্ষাগুলো হয়নি, সেগুলোর ক্ষেত্রে এসএসসির নম্বর বিবেচনায় নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে করা হয়েছে মূল্যায়ন।২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষা কোভিড মহামারী আর বন্যার কারণে বিলম্বিত হয়েছিল। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়া সেই পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ। ওই বছর এ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ ১২ হাজার ৬৭০ জন।
মহামারীর কারণে বিলম্বিত হয়েছিল ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষাও। কম বিষয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের পরীক্ষায় এই বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ; আর ১৩ হাজার ৭২০ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
আর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে মহামারীর কারণে পরীক্ষা হয়নি। জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়নে সবাই পাস করে, চট্টগ্রাম বোর্ডে জিপিএ-৫ পায় এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন।
মহামারী শুরুর আগে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল দুই হাজার ৮৬০ জন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ এম এম মুজিবুর রহমান বলেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের পাশাপাশি মানবিক বিভাগের কারণে সার্বিক ফলাফলে একটা প্রভাব পড়েছে।
“মাধ্যমিকের বিজ্ঞান শাখার বিভাগভিত্তিক বিষয়গুলোর চেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের বিষয়গুলোর সিলেবাসের আকার বড়। এবার বিভাগভিত্তিক সব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এসএসসির বিষয়গুলোর ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়েছে। এটার কারণে জিপিএ-৫ বেড়েছে।
“আবার ইংরেজিতে অনেকে ফেল করেছে যার কারণে এবারের ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।”