দৈনিক শিক্ষাডটকম, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামা শিক্ষক সমিতিকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সমিতির একাংশের নেতারা এতে সাড়া দিচ্ছেন না। তাঁদের অভিযোগ, আলোচনার নামে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ১৪ জানুয়ারি রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ স্বাক্ষরিত একটি আমন্ত্রণপত্র সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু তাঁরা এখনো সাড়া দেননি। এ ছাড়া উপাচার্য শিরীণ আখতার সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকীকে কয়েক দফা ফোন করে আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। সর্বশেষ ২৪ জানুয়ারি সমিতির কর্মসূচি চলাকালে প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদারের মাধ্যমে আলোচনায় বসার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এ বিষয়ে উপাচার্য শিরীণ বলেন, ‘আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে বারবার কল করেই যাচ্ছি। প্রক্টরও বুধবার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এর আগে দুজন সিনিয়র প্রফেসর গেছেন ওনাদের কাছে। ওনারা আসছেন না। ওনাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ আমি স্থগিত রেখেছি। আইন অনুষদের বিষয়ে আমি শিক্ষক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করতে চাচ্ছি দীর্ঘদিন ধরে। ওনাদের আলোচনায় বসা উচিত। আন্দোলন করার কিছুই নেই। ২৬ দফা দাবির ২০ দফা আমি অনেক পরিশ্রম করে বাস্তবায়ন করেছি।’
উপাচার্য জানান, শিক্ষক সমিতির দাবি ছিল নতুন বাস দিতে হবে। তিনি কয়েক দিন আগেই কয়েকটি বাস ও মাইক্রোবাস যুক্ত করেছেন। শিক্ষকদের পারিতোষিক ৮০ শতাংশ বৃদ্ধির ব্যবস্থা নিয়েছেন। ঢাকার গেস্টহাউসে নতুন ফ্ল্যাট কিনেছেন। মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা করে সিনিয়র শিক্ষকদের টেলিফোন বিল দিচ্ছেন। চট্টগ্রামে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য ক্লাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। এ জন্য ফ্ল্যাট অথবা ভবন ক্রয়ে কমিটি করে দিয়েছেন।
উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি বাংলা ও আইন বিভাগের নিয়োগ স্থগিত চেয়ে আন্দোলন শুরু করে। আমি যখন এগুলো সমাধান করতে গেলাম, তাঁরা পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন শুরু করলেন। তাঁদের উদ্দেশ্য যদি দাবি আদায় হয়, তাহলে তাঁদের তো আলোচনায় বসে সমাধান করতে হবে। আমার দরজা খোলা। আমি যেকোনো সময় আলোচনায় বসে সব দাবি পূরণের মানসিকতা রাখি। এটা অতীতেও আমি করেছি।’
যোগাযোগ করা হলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা বলিনি, আলোচনায় বসব না। আমাদের একটা ফোরাম (সমিতি) আছে। আমরা সেখানে আলোচনা করে তারপর বসব।’ তবে তিনি উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, আলোচনার নামে তাঁদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।