চবিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে জানেনই না বিভাগীয় সভাপতি - দৈনিকশিক্ষা

চবিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে জানেনই না বিভাগীয় সভাপতি

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) নিয়োগ নিয়ে চলছে হাজারো বিতর্ক। এরই মধ্যে বিভাগের অনুমোদন ছাড়া গত বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আবারও তিন বিভাগে সাত শিক্ষক চেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রশাসন। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে স্থায়ী প্রভাষক পদে একজন। আইন বিভাগে স্থায়ী প্রভাষক পদে দুজন। ফাইন্যান্স বিভাগে স্থায়ী প্রভাষক পদে দুজন, সহযোগী অধ্যাপক পদের বিপরীতে অস্থায়ী প্রভাষক পদে একজন এবং সহকারী অধ্যাপক পদের বিপরীতে অস্থায়ী প্রভাষক পদে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে কিছুই জানেন না ফাইন্যান্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. জান্নাত আরা পারভীন। তিনি বলেন, কোথায় কী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আমি দেখিনি। এ বিষয়ে আমরা তেমন কিছু জানিও না।

ফাইন্যান্স বিভাগে বর্তমানে কর্মরত ১৯ শিক্ষক। এর মধ্যে একজন সহযোগী অধ্যাপক ও ১৮ জন অধ্যাপক। বিভাগে নতুন শিক্ষক লাগবে কি না—ড. জান্নাত আরা বলেন, এ মুহূর্তে তেমন কোনো শিক্ষক লাগবে না। যথেষ্ট শিক্ষক আছে। সবাই আন্ডারলোডে। সেজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষক চেয়ে কোনো চিঠিও দেইনি।

জানা গেছে, গত ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৩তম সিন্ডিকেট সভায় ফাইন্যান্স বিভাগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তা ছাড়া আইন বিভাগ এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ফাইন্যান্স বিভাগের এক অধ্যাপক বলেন, বিভাগে শিক্ষক লাগবে কি লাগবে না, সেটা নির্ধারণ করবে পরিকল্পনা কমিটি। তারপর সেটা যাবে প্রশাসনের কাছে। যেখানে পরিকল্পনা কমিটিই হয়নি, সেখানে শিক্ষক নিয়োগের তো প্রশ্নই আসে না। প্রশাসন কী বুঝে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে আমি জানি না। যদি দিয়ে থাকে, এটা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের লঙ্ঘন। উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতা আছে বলে যা ইচ্ছে করতে পারেন না তিনি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য ও ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামীম উদ্দিন বলেন, ফাইন্যান্স বিভাগে কোনো পরিকল্পনা কমিটি হয়নি। পরিকল্পনা কমিটির সভা ছাড়াই সরাসরি শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রশাসন। এটা আইনের পরিপন্থি।

অন্যদিকে বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই আইন বিভাগে স্থায়ী প্রভাষক পদে দুই শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ আইনের লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন আইন বিভাগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একজন প্রভাষক ক্লাস নেবেন ১৪টি, সহকারী অধ্যাপক ১২টি, সহযোগী অধ্যাপক ১০টি এবং অধ্যাপক আটটি। সে হিসাবে এখন যে পরিমাণ শিক্ষক বিভাগে কর্মরত, তাতে তাদের এত ক্লাস নিতে হচ্ছে না। অর্থাৎ শিক্ষক পর্যাপ্ত পরিমাণে আছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক ডায়েরিতে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, বর্তমানে আইন বিভাগে ২৩ শিক্ষক কর্মরত। এর মধ্যে সহকারী অধ্যাপক পদে ৯ জন, সহযোগী অধ্যাপক পদে দুজন এবং অধ্যাপক পদে ১৩ জন।

আইন বিভাগের একজন অধ্যাপক বলেন, আমাদের বিভাগে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক আছেন। নতুন করে আর শিক্ষকের প্রয়োজন নেই; কিন্তু বিভাগের দু-তিনজন শিক্ষক ব্যক্তি স্বার্থে তাদের দল ভারি করার লক্ষ্যে বা আগামী ডিন নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার লক্ষ্যে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন।

আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সিফাত শারমিন বলেন, প্রশাসন আইন বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ হাছান মিয়া বলেন, সিন্ডিকেট ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বিভাগগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপাচার্যের চার বছর মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। যে কোনো সময় উপাচার্যের পদ পরিবর্তন হতে পারে। তাই ব্যক্তিগত স্বার্থে ও জনবল বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রশাসনপন্থিরা। এ বিষয়ে জানতে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030341148376465