চলতি বছরে ৯ জানুয়ারি সংঘর্ষ, ভাঙচুর, মারামারি ও সাংবাদিক হেনস্তাসহ বিভিন্ন ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীসহ মোট ১৮ জনকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কারাদেশ চলাকালে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ না নেওয়ার কথা থাকলেও বেশ কয়েকজন ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
সর্বশেষ গতকাল রোববার মানবিক দিক বিবেচনা করে ৯ ছাত্রলীগ কর্মীর বহিষ্কারাদেশ শেষ হওয়ার আগেই তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কারদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে বিভিন্ন বিভাগে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়া ৯ জনই শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মী।
তারা হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আরশিল আজিম এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শোয়েব মোহাম্মদ আতিক, সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের অনিক দাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তনয় কান্তি শিকদার, অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ লাবিব সাঈদ, ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সিফাতুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাহিদুল ইসলাম, একই বর্ষের ইতিহাস বিভাগের মো. মোবারক হোসেন ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী হাছান মাহমুদ।
এদিকে শাস্তির মেয়াদ শেষ না হওয়ার আগে বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, ক্ষমা তাদের জন্য, যারা ভুল বুঝতে পারে। কিন্তু বহিষ্কৃত এসব শিক্ষার্থীরা কতটুকু সংশোধন হয়েছেন সেটা একটা বড় প্রশ্নের জায়গা। তাছাড়া আমরা আগেও দেখেছি বহিষ্কারাদেশ তুলে দেওয়ার পর ফের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন অনেকে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেটাকে ‘মানবিকতা’ বলছে সেটা আরও অপরাধে জড়াতে ‘উষ্কে’ দেওয়া। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব বন্ধ হোক, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক থাকুক।
প্রক্টর স্বাক্ষরিত ওই মানবিক চিঠিতে বলা হয়, ‘মানবিক দিক বিবেচনায় বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলো। এরপর থেকে তারা স্বাভাবিক নিয়মে পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন। তবে ভবিষ্যতে বিভাগের একাডেমিক বা পরীক্ষা কার্যক্রমে আপনি (বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী) বা আপনার পক্ষের কেউ বিঘ্ন ঘটালে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে আপনার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে কোনো প্রকার কারণ দর্শানো ছাড়াই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, মানবিক কারণে ৯ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে পুনরায় তদন্তের আবেদন জানিয়েছিল। এরপর আবারও তদন্ত কমিটি করা হয়। সেই তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।