দৈনিক শিক্ষাডটকম, চবি : পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরও যেসব শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে অবস্থান করছেন, তাদের আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদেরও হল ছাড়তে বলা হয়েছে। ওই দিনের পর এমন কাউকে হলে পাওয়া গেলে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ ও এর আগে যেসব শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন, তাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে। তাদের মধ্যে যারা এখনো আবাসিক হলে অবস্থান করছেন, তাদের ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হলো।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশনা এবারই প্রথম নয়। গত এক বছরে এখন পর্যন্ত তিনবার এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর আগে গতবছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি একই ধরনের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলো কর্তৃপক্ষ। তাতে ১৫ মার্চের মধ্যে অছাত্রদের হল ছাড়তে বলা হয়। দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিলো গতবছরের ২৪ সেপ্টেম্বর। ওই দিন সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে অছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু ছাত্রত্ব নেই, এমন একজনকেও এখন পর্যন্ত হল থেকে বের করতে পারেনি প্রশাসন। কারোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারেনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি হলের মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ১২টি (ছাত্রদের ৭, ছাত্রীদের ৫টি)। ছাত্রদের সাতটি হলে আসন রয়েছে ১ হাজার ৮৮টি। এর মধ্যে ১ হাজার ২০টি কক্ষ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিয়ন্ত্রণ করে। বাকি কক্ষগুলোয় থাকেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেন এমন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রদের এ সাতটি হলে থাকতে হলে ছাত্রলীগের অনুমতির বিকল্প নেই। নিয়ম মেনে এসব হলে সর্বশেষ সাধারণ ছাত্রদের আসন বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের জুনে। এরপর থেকে বরাদ্দও বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। সাড়ে ছয় বছর ধরে বরাদ্দ না হওয়ায় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার শর্তে আসন পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত বলেও অভিযোগ আছে। এ গ্রুপিং নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনার খবর প্রায়ই শোনা যাচ্ছে।
এর আগে গতকাল রোববার ইউজিসিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ক্যাম্পাসে সংর্ঘষ বা অপরাধের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাসও দেন মন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী এ আহ্বান জানানোর পরদিনই অছাত্রদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলো চবি প্রশাসন।