ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষের কাছে শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত বুধবার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে ছাত্রলীগের ওই নেতারা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেন এবং অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অধ্যক্ষের পক্ষে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন কলেজের নিরাপত্তা কমিটির আহ্বায়ক সবুজ আহমেদ।
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ। তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, গত মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৪টায় কলেজের সাবেক ছাত্র এবং বর্তমান কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ বড়ুয়া ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তৌহিদুল ইসলাম আশরাফী অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকে ৮০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসাইনকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন। একপর্যায়ে কক্ষের দরজা বন্ধ করে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন তাঁরা। এ সময় উপস্থিত ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম আনোয়ারুল হক ও রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. খলিলুর রহমান ওই দুই নেতাকে থামানোর চেষ্টা করলে তাঁদের সঙ্গেও অশালীন আচরণ করেন। চাঁদা না দিলে ভবিষ্যতে দেখে।
নেওয়ার হুমকিও দেন। পরদিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা অধ্যক্ষের অফিসে যান। তখন অধ্যক্ষকে না পেয়ে তাঁর কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা প্রসেনজিৎ বড়ুয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তৌহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ আগস্টের অনুষ্ঠানের জন্য অধ্যক্ষের কাছে গেলে তিনি সহযোগিতা করেননি। অধ্যক্ষ সরকারবিরোধী লোক। এসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছে। কক্ষে তালা দেওয়া হয়নি।
অধ্যক্ষ আলমগীর হোসাইন জানান, ১৫ আগস্ট নয়, নিজস্ব অনুষ্ঠানের জন্য ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা তাঁর কাছে লিখিতভাবে ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দেওয়ার এখতিয়ার নেই জানালে তাঁর সঙ্গে অশোভন আচরণ করে হুমকি দিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর গভীর রাতে এসে তালা খুলে দিয়ে যান।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জরুরি সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আগের শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিট বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ এবং রাত ১২টার মধ্যে কলেজের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।