চাকরিপ্রার্থীদের আটকে রেখে নির্যাতন, কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ - দৈনিকশিক্ষা

চাকরিপ্রার্থীদের আটকে রেখে নির্যাতন, কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে অন্তত ১১ প্রার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় হওয়া মামলার কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আজ শনিবার সকাল থেকে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের বৈঠক চলছে। ওই বৈঠকে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা রয়েছে। 

গত বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী এক চাকরি প্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ছয় নেতা-কর্মীকে আসামি করে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক বেলাল হোসেন, ছাত্রলীগের কর্মী ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রাফি হাসান ও রেদোয়ান হাসান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান রাব্বি, কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের মো. শোয়েব ও পিইএসএস বিভাগের শাহিনুর। সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ছাত্র। তাঁদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার পর বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ক্যাম্পাসে অবস্থিত ছাত্র হলে অভিযান চালাতে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তখন পুলিশ হলে প্রবেশ না করে ফিরে যায়।

যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, আসামিদের কেউ এখনো গ্রেফতার হননি। তাঁদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্র জানা গেছে, সম্প্রতি লিফট অপারেটরের ১২টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ৩৮ প্রার্থীকে পরীক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। ওই দিন সকাল ১০টা থেকে চাকরিপ্রার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে থাকেন। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তাঁদের ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।

এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে খবর আসে, প্রার্থীদের মধ্যে ১১ জনকে ক্যাম্পাসের ছাত্র হলে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ ক্যাম্পাসে পৌঁছালে বিকেলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর সন্ধ্যায় আটকে রাখা প্রার্থীদের মধ্যে আরো পাঁচজনের পরীক্ষা নেয়া হয়। ৩৮ প্রার্থীর ২৬ জন শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে পেরেছেন। তাঁদের মধ্যে আরাফাত হোসেন ইমন নামের এক প্রার্থী রাতে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লিফট অপারেটর পদে চাকরি পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে গেলে সোহেল রানা, বেলাল হোসেন, রাফি হাসান, রেদোয়ান হাসান, রাব্বি, শোয়েব, জিসানসহ অন্তত ১৫ জন তাঁদের ধরে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের আটকে রেখে রড, পাইপ, হকিস্টিক ও লাঠিসোঁটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন তাঁরা। পরে তাঁদের চোখ বেঁধে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এদিকে চাকরি প্রার্থীদের হলে আটকে রাখার প্রমাণ গায়েব করতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে গেছেন, এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন গতকাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার লোকজন চাকরিপ্রার্থীদের আটকে রাখেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হলের যে কক্ষগুলোতে প্রার্থীদের আটকে রাখা হয়, সেসব কক্ষে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা থাকেন।

ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকা হলে বিকেলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অপহরণ ও সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নেয়ার অপরাধে মামলা করা হবে। একই সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তিনি আরো বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কঠিন পদক্ষেপ নিতে চাই। এ কারণে রিজেন্ট বোর্ডের মিটিং পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।’

আজ সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের বৈঠক শুরু হয় বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক আবদুর রশিদ। তিনি বলেন, উপাচার্যের সভাপতিত্বে হওয়া ওই সভায় ক্যাম্পাসে চাকরির পরীক্ষা দিতে আসা প্রার্থীদের আটকে রাখার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এরপর পরবর্তী করণীয় বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ - dainik shiksha এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে - dainik shiksha শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী - dainik shiksha মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের - dainik shiksha অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033268928527832