চাকরির পরীক্ষায় মৌলিক কোডিংয়ে ফেল করেন বেশির ভাগ স্নাতক - দৈনিকশিক্ষা

চাকরির পরীক্ষায় মৌলিক কোডিংয়ে ফেল করেন বেশির ভাগ স্নাতক

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক: কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ও ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইটি) বিষয়ের শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি অর্জনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো কোডিংয়ে দক্ষতা অর্জন। এজন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এসব বিষয়ের শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবেই অন্তত চারটি কোডিং সংক্রান্ত কোর্স (কমপক্ষে ১৬-১৮ ক্রেডিটের) পড়ানোর কথা। যদিও চাকরির বাজারের নিয়োগদাতাদের অভিযোগ, কোডিংয়ের মৌলিক দক্ষতা অর্জন ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে বেরিয়ে আসছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। ফলে চাহিদা থাকলেও প্রয়োজনীয় মাত্রায় সিএসই ও আইটি স্নাতকদের নিয়োগ দিতে পারছেন না তারা। 

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) এক পর্যবেক্ষণেও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কোর্সে উত্তীর্ণ হয়ে এলেও চাকরির লিখিত পরীক্ষায় মৌলিক কোডিং, ইংরেজি ও গণিতের মতো বিষয়ে ফেল করছেন ৮০ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী। বিশেষ করে মৌলিক কোডিংয়েই তাদের অকৃতকার্য হতে দেখা যায় সবচেয়ে বেশি। 

 

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিএসই, আইসিটি, আইটি ও আইসিই বিষয়ের পাঠ্যক্রম নিয়ে ২০২২ সালে একটি নির্দেশনা দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এতে প্রোগ্রামিং সম্পর্কিত তিন ক্রেডিটের ন্যূনতম চারটি থিওরি কোর্স এবং এক কিংবা দেড় ক্রেডিটের ন্যূনতম চারটি ল্যাব কোর্স বাধ্যতামূলক করা হয়। সব মিলিয়ে এ নির্দেশনায় অত্যাবশ্যকীয় প্রোগ্রামিং কোর্স রাখা হয় ১৬-১৮ ক্রেডিট। কিন্তু শিক্ষার্থীসহ খাতসংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন সে নির্দেশনা মানছে না। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে তা পরিপালন হলেও হচ্ছে দায়সারাভাবে।

এডিবির ‘পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ: ইমপ্রুভিং কম্পিউটার অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন প্রজেক্ট’ শীর্ষক এক ঋণ প্রস্তাব প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সিএসই ও আইটি স্নাতক থাকলেও তাদের মধ্যে প্রয়োজনীয় দক্ষতার বেশ ঘাটতি রয়েছে। চাকরির লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে এ দুই বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের ৮০ শতাংশই মৌলিক কোডিং, ইংরেজি ও গণিতের মতো বিষয়ের লিখিত পরীক্ষায় ফেল করছেন। 

এ বিষয়ে সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ হলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারিকুলামে হাতে-কলমে শিক্ষার সুযোগ ও প্রোগ্রামিংয়ের সমস্যা সমাধানের দক্ষতা (প্রবলেম সলভিং স্কিল) বাড়ানোর মতো কোর্স কম। সিএসই ও আইটিতে যে পরিমাণ ক্রেডিট বরাদ্দ থাকার কথা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মাত্র ৩০ শতাংশ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চেয়েও কম বরাদ্দ রাখা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষক ও ল্যাব সংকটের পাশাপাশি শিক্ষার সঙ্গে পেশাগত ক্ষেত্রের বাস্তবমুখী সংযোগের ঘাটতিও এক্ষেত্রে বড় প্রভাবকের ভূমিকা রাখছে। 

ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২২-এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী সিএসই ও আইটিতে অধ্যয়ন করছেন। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে প্রতি বছরই স্নাতক সম্পন্ন করেন ১২ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। তবে এর বিপরীতে দেশের আইটি শিল্পে প্রতি বছর জনবল নিয়োগ হয় কেবল পাঁচ হাজার। অর্থাৎ প্রতি বছর চাহিদার দ্বিগুণেরও বেশি শিক্ষার্থী এ দুই বিষয়ে স্নাতক করছেন। যদিও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী পাচ্ছে না। ফলে স্নাতক শেষে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার অভাবে চাকরিপ্রত্যাশীদের বেশির ভাগকেই দীর্ঘদিন বেকার থাকতে হচ্ছে।

নিয়োগদাতারা বলছেন, চাহিদা থাকলেও সিএসই ও আইটি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্য থেকে প্রয়োজনমতো নিয়োগ দিতে পারছেন না তারা। দেশের আইটি খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, ‘বিডি জবসের বিজ্ঞাপনগুলো লক্ষ করলে দেখা যাবে, প্রায় ৮০ শতাংশ চাকরিই সিএসই ও আইটি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য। কিন্তু আমরা যখন প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষা নিই, তখন বেশির ভাগ সময়ই কাঙ্ক্ষিত দক্ষতাসম্পন্ন প্রার্থী পাই না। এর কারণ হলো দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কারিকুলাম পেশাগত চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হচ্ছে না।’ 

তিনি বলেন, ‘আইটি ফার্মগুলোয় চাকরির ক্ষেত্রে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটদের এ ধরনের অভিজ্ঞতা থাকে না। এ কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়োগ দেয় না। আর যারা নিয়োগ দেয় তাদের প্রথমে ছয় মাসের একটি ট্রেনিং করিয়ে নিতে হয়, যেটিকে নন-রেভিনিউ ট্রেনিং বলা হয়। যদি এ ট্রেনিংই কারিকুলামে ইন্টার্ন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হতো তাহলে কিন্তু এ জটিলতা তৈরি হতো না। এছাড়া উন্নত দেশগুলোয় দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইন্ডাস্ট্রি পরিদর্শন করে এবং ইন্ডাস্ট্রির চাহিদার কথা বিবেচনা করে গ্র্যাজুয়েটদের সেভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলে। যেমন আমাদের দেশে এখন এআইয়ের চাহিদা বাড়ছে এবং আমাদের এ বিষয়ে দক্ষ কর্মী দরকার। যদি ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সংযোগ তৈরি হয় তাহলে দেখা যাবে প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করবে। এতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো যেমন লাভবান হবে তেমনি শিক্ষার্থীদেরও শ্রমবাজারে ভালো অবস্থান তৈরি হবে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শুধু শেখালেই হবে না, বরং কর্মবাজারে এখন চাহিদা কী সেটি বিবেচনা করে শেখাতে হবে।’ 

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড সফটওয়্যারের শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের চিত্র নিয়ে ২০১৯ সালেও একটি জরিপ করেছিল এডিবি। ওই জরিপে দেখা যায়, সিএসই ও সফটওয়্যারের শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই স্নাতক-পরবর্তী এক বছর বেকার থাকেন। স্নাতক শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে চাকরি পান মাত্র ২০ দশমিক ৬ শতাংশ। 

ওই প্রতিবেদনেও সিএসই ও আইটি বিষয়ে স্নাতকদের বৃহদংশ প্রথম এক বছর বেকার থাকার বড় কারণ হিসেবে দক্ষতার ঘাটতিকে সামনে আনা হয়েছে। বিষয়টি অনুধাবন করতে পারছেন সিএসই ও আইটি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী চাকরিপ্রত্যাশীরাও। রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে সিএসইতে স্নাতক করেন আনাভী হাসান (ছদ্মনাম)। সিএসই বিষয়ের স্নাতক হলেও কোডিংয়ে দুর্বলতা এখন চাকরির বাজারে বিপাকে ফেলছে তাকে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম ও ক্লাসের দুর্বলতাকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আমি থিওরি বেশ ভালো বুঝলেও শুরু থেকেই কোডিং কঠিন মনে হতো। শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে দুর্বলতা নিয়েই স্নাতক শেষ করি। আমার মতো অনেকেই ছিল যাদের কাছে কোডিং বেশ কঠিন মনে হতো। তবে এ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পদক্ষেপ ছিল না। ক্লাসগুলো অনেকটা দায়সারাভাবে নেয়া হয়েছে, আর আমরা কোনোমতে পাস করে এসেছি। তবে এখন চাকরির বাজারে এসে দুর্বলতাটা ভালোভাবেই উপলব্ধি করছি।’

বেসরকারির মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও এখন এ সমস্যার মোকাবেলা করতে হচ্ছে। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেজবাহ রহমান (ছদ্মনাম) স্নাতক শেষ করেছেন দেড় বছর আগে। ওই সময় থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি দেশী ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরির চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু কোনোটিরই নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হতো বইয়ের বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যা সমাধানের প্রতি। এছাড়া কিছু প্রোগ্রামিং ক্লাস ও ল্যাব হতো। তাও গতানুগতিক। কোডিংয়ের সমস্যা সমাধান বলতে যা বোঝায় সে চর্চা খুব একটা ছিল না। পরীক্ষার প্রশ্নও অনেক বছর ধরে একই রকম হয়ে আসছে। ফলে ভালো ফলাফল করতে সবাই বই আর নোটের ওপরই নির্ভর করতাম। কিন্তু পরে চাকরির বাজারে এসে সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা হলো। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে নিয়োগ পরীক্ষায় যে ধরনের সমস্যা সমাধান করতে দেয়া হয়, তার অধিকাংশই আমাদের অপরিচিত।’

চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি জটিলতায় ভুগছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যদিও তাদের পছন্দের বিষয়ের তালিকায় শুরুতেই থাকে সিএসই বা আইটি। মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৩০ শতাংশই এ বিষয়ে ভর্তি হন। প্রথম সারির কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কর্মক্ষেত্রে তুলনামূলক ভালো করলেও বেশির ভাগই দীর্ঘ সময় বেকার থাকছেন। তাদেরই একজন ফয়েজ আহমেদ (ছদ্মনাম)। রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে স্নাতক শেষ করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন চেষ্টা করলেও কোনো চাকরিই জোগাড় করতে পারেননি। বর্তমানে তিনি বরিশালে বাবার পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করছেন।

ফয়েজ আহমেদ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই গণিত কঠিন মনে হতো। মূলত মায়ের ইচ্ছাতেই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া। ৩-এর বেশি সিজিপিএ নিয়ে স্নাতক শেষ করলেও আশানুরূপ কোনো চাকরি পাইনি। পরে পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনার সিদ্ধান্ত নিই।’ 

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করছেন কম্পিউটার শিক্ষা ও প্রকৌশলসংশ্লিষ্টরাও। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির পরিচালক ড. হোসেন আসিফুল মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারিকুলাম তৈরি হয় না। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো যে ধরনের স্কিল চায় সেগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে ওঠে না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, পরীক্ষায় কঠিন প্রশ্ন হলে শিক্ষার্থীরা বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়। ফলে অনেক শিক্ষক তুলনামূলক সহজ প্রশ্ন করেন এবং শিক্ষার্থীরা কম পড়ে বা ভালোভাবে না শিখেই গ্র্যাজুয়েট হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের কর্মবাজারের জন্য উপযোগী করে গড়ে তুলতে কারিকুলামে ইন্টার্নশিপ অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। তারা যদি ছয় মাস একটি প্রতিষ্ঠানে ভালোভাবে ইন্টার্ন সম্পন্ন করে তবে অনেক কিছু হাতে-কলমে শেখার সুযোগ পাবে এবং তাদের কর্মবাজারে মানিয়ে নেয়া সহজ হবে। এছাড়া পাঠ্যক্রমকেও শ্রমবাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী করতে হবে।’

দেশে সিএসই ও আইটি গ্র্যাজুয়েটদের কর্মবাজারের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে কারিকুলাম আধুনিকায়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রেও মেধা বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল আরেফিন। 

তিনি বলেন, ‘সিএসই ও আইটি শিক্ষার্থীদের কর্মবাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ করে গড়ে তুলতে যেমন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাহিদা নির্ণয় করে কারিকুলাম উন্নয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে এটাও নিশ্চিত হতে হবে যারা এ বিষয়গুলোয় ভর্তি হচ্ছেন তারা যথেষ্ট মেধাবী কিনা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েকটি প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধার বিষয়টি যাচাই করা হয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এমনটি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় প্রয়োজনীয়সংখ্যক দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। কারণ শিক্ষক সংখ্যা কম হলে শিক্ষার্থীদের প্রতি সঠিকভাবে মনোযোগ দেয়া সম্ভব হয় না এবং শিখন ঘাটতি তৈরি হয়।’ 

শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চা ও দক্ষতায় ঘাটতি থেকে যাওয়া ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মনিটরিং বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের সভাপতি ড. শেখ নূরী। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় কয়েক বছর ধরে শিক্ষায় বেশ এগিয়েছে এবং শিক্ষার্থীও ভালো করছে। যদি সামগ্রিকভাবে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলি তাহলে আমি মনে করি মনিটরিং বাড়ানো উচিত। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খারাপ করছে এটি আইডেন্টিফাই করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার মানোন্নয়নে আরো সচেষ্ট হবে। এছাড়া সব বিশ্ববিদ্যালয়কে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক উন্নয়নেও আরো সচেষ্ট হতে হবে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বেকারত্ব দূর করতে তাদের মধ্যে সফট স্কিল ডেভেলপ করা অত্যন্ত জরুরি। এডিবির প্রতিবেদনে যে বিষয়গুলো বলা হয়েছে ইংরেজি, মৌলিক কোডিং, গাণিতিক দক্ষতা এগুলো সবই সফট স্কিলের মধ্যে অন্তর্গত। শিক্ষার্থীদের মাঝে যদি সফট স্কিল গড়ে তোলা না যায়, শুধু গতানুগতিকভাবে একটি বিষয় পড়ানো হয় তবে দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ক্রমেই বাড়বে। এছাড়া সিএসই, আইটির মতো বিষয়গুলোয় কোর্সের যেকোনো পর্যায়ে অন্তত তিন মাসের ইন্টার্নশিপ রাখা উচিত। এতে তারা কর্মজগৎ সম্পর্কে ধারণা পাবে।’ সূত্র: বণিক বার্তা

মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057380199432373