চার বছর বয়সে মুক্তিযোদ্ধা, এখন স্কুলের দপ্তরি - দৈনিকশিক্ষা

চার বছর বয়সে মুক্তিযোদ্ধা, এখন স্কুলের দপ্তরি

রুমি আক্তার পলি, টাঙ্গাইল |

 হযরত আলী নামে একজন সনদধারী মুক্তিযোদ্ধা এখন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ছমির উদ্দিন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে দপ্তরির কাজ করছেন। তিনি উপজেলার উত্তর ধলাপাড়া গ্রামের মৃত ইয়াসিন আলীর ছেলে। নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও ভোগ করেন। কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিলো মাত্র চার বছর। এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে। 

ধলাপাড়া ছমির উদ্দিন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে এই হযরত আলীর চাকরির নিয়োগ পত্রসহ জাতীয় পরিচয়পত্র দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমের হাতে এসেছে। তাতে হযরত আলীর জন্ম তারিখ ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জানুয়ারি।

এ বিষয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তাকে হযরত আলী বলেন, আমার জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল আছে। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা এতে কোনো ভুল নেই। আপনি কোন কমান্ডারের অধীনে যুদ্ধ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অনেকের অধীনেই যুদ্ধ করেছি। একেক সময় একেক জনের অধীনে যুদ্ধ করেছি। লোকমান ও রিয়াজ তালুকদারের অধীনেও।

ভুল সংশোধন না করে ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কেনো তিনি ভাতা তুলছেন জানতে চাইলে হযরত আলী বলেন, আমি অনেক বার এই ভুল সংশোধন করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে তাহলে এতো বছরেও কেনো কোনো ব্যবস্থা নেননি প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি অনলাইনে আবেদন করেছি। এ ছাড়া আগারগাঁও অফিসেও গিয়েছি। কিন্তু আমি সাধারণ মানুষ, তাই পাত্তা পাইনি। হযরত আলীর কাছে অনলাইন আবেদনের কপি চাইলে তিনি দেবেন বলেও দিতে পারেননি। এরপর থেকে তিনি প্রতিবেদকের ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে ধলাপাড়া ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার আব্দুল বাতেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, হযরত আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা। হযরত আমার সঙ্গেই যুদ্ধ করেছেন। কোন কমান্ডারের অধীনে যুদ্ধ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ইদ্রিস কমান্ডারের অধীনে যুদ্ধ করেছি।

হযরত আলীর জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ ভুল আছে এটা তিনি জানেন বলেও জানান। কীভাবে এই ভুল তথ্য দিয়েই বছরের পর বছর হযরত আলী ভাতা তুলছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভুল সংশোধন করার চেষ্টা হযরত আলী করেছেন। কিন্তু সম্ভব হয়নি। এটা আমাদের কিছু করার নেই। ভাতা তুলতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

ধলাপাড়া ছমির উদ্দিন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী চৌধুরী পরিবার প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর মোশারফ হোসেনের সই করা হযরত আলীর নিয়োগ পত্র থেকে জানা গেছে, ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি থেকে বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান সহকারী হিসেবে যোগদানের অনুমতি পান তিনি। কিন্তু সে সময় বিজ্ঞান সহকারী পদ বলতে কোনো পদ ছিলো না। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হযরত আলী এই বিদ্যালয়ের একজন দপ্তরি। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, তিনি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। 

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দিয়েও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাকের আহমেদ এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে ফোনে  পাওয়া যায়নি।

 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053420066833496