জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পোড়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তল্লাশি চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের ঝিনাইদহ সমন্বিত অফিসের কর্মকর্তারা চেয়ারম্যানের দুটি বাড়ির মাপজোক করেন। দুদক অফিস থেকে জানানো হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
দুদকের উপ-পরিচালক জাহিদ কামাল গত ২৫ অক্টোবর বাদি হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, শহিদুল ইসলাম হিরণ ১ কোটি ৩৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দ এবং ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে অদ্যবধি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এসময় তিনি নিজে ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৪৩৩ টাকার জমি এবং এক কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যমানের বাড়ি নির্মাণসহ এক কোটি ৩৮ লাখ ৫৭ হাজার ৪৩৩ স্থাবর সম্পদ, গাড়ি, ব্যবসায়িক পুঁজি, ইলেক্ট্রিক, ইলেকট্রনিকস ও আসবাবপত্রসহ মোট ২২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭০ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব সম্পদ অর্জনের উৎস হিসেবে সম্মানী ভাতা, গৃহ সম্পত্তি, কৃষি ও জমি বিক্রিসহ বিভিন্ন খাত থেকে ৪৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকার আয় পাওয়া যায়। পারিবারিকসহ অন্যান্য খাতে শহিদুল ইসলাম হিরণের ব্যয় পাওয়া যায় ১৬ লাখ ৬ হাজার ৪৩০ টাকা। আয় থেকে তার ব্যয় বাদ দিলে তার সঞ্চয় থাকে ২৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭০ টাকা। যার বিপরীতে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায় ১ কোটি ৬১ লাখ ৩৪ হাজার ৩ টাকা।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, এক্ষেত্রে তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকার অসঙ্গতিপূর্ণ ও জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পত্তি পাওয়া যায়, যা তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। ফলে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় অপরাধ করায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে প্রথম অনুসন্ধান কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের যশোর অফিসের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম মোড়ল ও দ্বিতীয় অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন দায়িত্ব পালন করেন।
জানতে চাইলে চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার কোনো জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ থাকতে পারে না? আমি তো ফকির না! আমার এক কোটি টাকা থাকতেই পারে। আমি দুদককে চ্যালেঞ্জ করেছি। তারা আমার বাড়িতে না ঢুকে বাইরে থেকে মেপে চলে গেছে। ওই সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। পরে বিষয়টি শুনেছি। অনেক সাংবাদিক ও অনেক দুদক অফিসার আমার কাছে ফোন করে উপকার করার কথা বলেছে। আমি বলেছি কাউকে উপকার করতে হবে না। আর যে সাংবাদিকরা আমার বিরুদ্ধে লেখছে জানুয়ারি মাস পার হোক তাদের (লেখার অযোগ্য ভাষা)। তখন দেখবো তারা কী লেখে। আর আমার দুদকের করা মামলাটি আইনগতভাবে লড়বো।