ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ছাড়াও ৫ বাহিনী গু*লি ছুড়েছে - দৈনিকশিক্ষা

ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ছাড়াও ৫ বাহিনী গু*লি ছুড়েছে

দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ছাড়া আরো অন্তত পাঁচটি বাহিনী ছাত্র জনতার ওপর প্রাণঘাতী গুলি ছুড়েছে। অনেক জায়গায় ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে এবং তাদের নির্দেশে গুলি ছোড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বাহিনীগুলো হচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও আনসার।

গেল ২০ জুলাই মোহাম্মদপুরে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর সদস্যরা অ্যামবুশ হয়ে গুলি চালাচ্ছেন আন্দোলকারীদের ওপর। সেনা সদস্যদেরকে এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশনা দেন আন্দোলকারীদের ওপর গুলি চালানোর জন্য। এই নির্দেশনায় শুধু সেনাবাহিনীই নয়, ছিলেন বিজিবি, পুলিশ ও এপিবিএনও। এই গুলি চালানো নিয়ে বিতর্কে পড়তে হয় সেনাবাহিনীকে।

অনুসন্ধানে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয় সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে। যিনি মোহাম্মদপুরে ওই দিন সেনাবাহিনীকে গুলি করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, ওইদিন মোহাম্মদপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন ৩৬তম বিসিএস কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, যিনি এখন আছেন ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ বিভাগে। সেদিন গুলির নির্দেশ দেয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল কিনা জানতে চাইলে রীতিমত অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন তিনি।

মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি গুলি চালানোর নির্দেশ দিলেও এটি নিশ্চিত করেছি যে কেউ আহত হয়নি। কোনোভাবেই কেউ যেন আহত না হয় এ কারণে আমি ফাঁকা গুলির নির্দেশ দিয়েছি।’

২০ জুলাই বিকেলে মোহাম্মদপুরে সেই গোলাগুলিতে একাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতদের একজন ২৪ বছর বয়সী আখের রস বিক্রেতা সুজন। রাস্তা পারাপারের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। 

নিহতের বাবা ও ভাই বলেন, সেনাবাহিনী রাস্তা-ঘাটে কাউকে দাঁড়াতে দেয়নি তখন। রাস্তায় লোক দেখলেই সরাসরি গুলি চালিয়েছে।’

গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও র‍্যাবের করা মামলা নথিপত্র ঘেটে দেখা যায়, ১৮ জুলাই থেকে ২১ জুলাই শুধু এই চার দিনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ছয় বাহিনী গুলি ছোড়ে প্রায় ১৭ হাজার রাউন্ড। এখন গুলির বিষয়টি মানতে নারাজ র‍্যাব। তবে বিজিবি বলছে, যারা গুলি করেছে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা।

বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘অনেক অরগানাইজেশনে আছে যেখানে অপরাধের শাস্তি হলো ওএসডি বা রিমুভাল। কিন্তু আমরা এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিনি। ডিপার্টমেন্টাল জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অপরাধীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করেছি আমরা।’ 

এ বিষয়ে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, ‘ইউএন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিকে আমরা এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতার চেষ্টা করছি।’

সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, ন্যায্য দাবি নিয়ে আসা আন্দোলনকারীদের সরাসরি গুলি করা বেআইনি। এ ক্ষেত্রে কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদেরই দায় বেশি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল (অব) আব্দুল হক বলেন, ‘আর্মি কিন্তু মোহাম্মদপুরের ঘটনায় গুলি করতে চায় নাই। অথচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গুলি করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু ব্রিটিশ আমল থেকে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে যে, ম্যাজিস্ট্রেটরা হবেন ঠান্ডা মাথার, তাঁরা উগ্র স্বভাবের হবেন না। তাঁরা যে কোনো সিদ্ধান্ত অনেক বুঝে-শুনে নেবেন।’

আর মানবাধিকার কর্মীদের মত, ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছোড়ার জন্য দায়ী সবাইকে আনতে হবে আইনের আওতায়।

গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেলিন বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলি ছোড়ার নির্দেশনা কোথা থেকে এবং কেমন করে এসেছে বা কারা দিয়েছেন সেই বিষয়গুলোই খতিয়ে দেখতে হবে। অপরাধী যেই হোন বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।’

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ঢাকা জেলা প্রশাসনের সকল এসিল্যান্ড ও নির্বার্হী ম্যাজেস্ট্রেটরা মাঠের দায়িত্বে ছিলেন। অনুসন্ধান বলছে, গুলি ছোড়ার নির্দেশ আসে এদের অনেকের কাছ থেকেই।

ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041639804840088