পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি বৈঠক করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাতে এ বৈঠক করা হয়। বৈঠকে এই দুই আন্দোলনে সমর্থন জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করে, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সমাজে বৈষম্য তৈরি করে- যা সংবিধান বিরোধী। সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনও ন্যায়সঙ্গত।
আরো পড়ুন: শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সতর্ক দৃষ্টি আওয়ামী লীগের
জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য বলেন, আমরা ছাত্র ও শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজ শনিবার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সমর্থন জানানো হবে।
বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাত্র ও শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন।
বৃহস্পতিবার রাতে স্থায়ী কমিটি জরুরি সভায় নেতারা বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটার ব্যাপারে ছাত্র-তরুণদের দাবি অবশ্যই ন্যায্য এবং যৌক্তিক। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও হুমকির ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়।
দলের নীতিনির্ধারকরা বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংবিধান পরিপন্থি। সংবিধানে মানুষে মানুষে বৈষম্য তৈরি করা যাবে না উল্লেখ আছে। সবমিলিয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রায় ৫৫ শতাংশ (মুক্তিযোদ্ধা-সন্তান-নাতি কোটায় ৩০ ভাগ)। সচেতন মুক্তিযোদ্ধারাও এই কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে। এর ফলে একদিকে যেমন মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে মেধাশূণ্য একটি প্রশাসন তৈরি হচ্ছে।
সভায় একজন নেতা ৭২ সংবিধানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই সংবিধানে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সম্পর্কে কিছুই বলা নেই। সংবিধান বৈষম্যহীনতার কথা বলেছে। তবে, ক্ষেত্র বিশেষ ব্যতিক্রম হিসেবে কোটাকে অনুমোদন করেছে। সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদ এই বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।
সভায় নেতারা আরো বলেন, আদালতকে ব্যবহার করে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করেছে। এটি স্পষ্টই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। কোটা কখনো মেধার বিকল্প হতে পারে না। তবে প্রতিবন্ধীদের বিষয়টি রাষ্ট্র অবশ্যই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত বলেও মনে করেন তারা।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত। প্রত্যয় পেনশন স্কিমে শিক্ষকদের যুক্ত করা সরকারের গণবিরোধী নীতি। আর কোটা বিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিকতা আগেই প্রমাণ হয়েছে।