ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে শপথ নিয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) স্নাতক-স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে সন্ত্রাস, ছাত্ররাজনীতি, র্যাগিং ও মাদককে না বলার শপথ নিয়েছেন তারা। প্রায় তিনদশক ধরে ছাত্ররাজনীতিমুক্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথা অনুযায়ী নতুন শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন।
সোমবার সকালে নবীন শিক্ষার্থীদের ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক কাউন্সেলিং অ্যান্ড মোটিভেশন শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধনী দিনে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল এবং শিক্ষা স্কুলভুক্ত ৬টি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের শপথ করানো হয়। খুবি প্রশাসনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এর আগে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখোমুখি হয় শিক্ষার্থীরা। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নবাগত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের ভবিষ্যৎ কিভাবে তৈরি হবে সেটা সম্পূর্ণ তোমার হাতে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে আদর্শ মানুষ হতে হবে। দেশ, জাতি ও সমাজের নেতৃত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মধ্যে অনন্য এক বিশ্ববিদ্যালয়। এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া ও গবেষণার প্রতি বেশি মনোযোগ দেয়া হয়। এ প্রতিষ্ঠানের গ্রাজুয়েটরা দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাদের সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। উপাচার্য সেসব কৃতি অ্যালামনাইদের পথ অনুসরণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে নবাগত শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেনন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. কামরুল হাসান তালুকদার এবং শিক্ষা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক তাছলিমা খাতুন। সভাপতিত্ব করেন আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার। স্বাগত বক্তব্য দেন আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. জগদীশ চন্দ্র জোয়ারদার। অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনগুলো প্রধান এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্য রিসোর্স পার্সন হিসেবে ‘কি টু সাকসেস ইন হায়ার এডুকেশন’ শীর্ষক একটি সেশন উপস্থাপন করেন। এছাড়াও কর্মশালায় ‘টিচিং লার্নিং অ্যাপ্রোচেস ইন হায়ার এডুকেশন’, ‘এডুকেশন সিস্টেম, রুলস এন্ড রেগুলেশন্স ইন কেইউ’, ‘এক্সেস টু রিসোর্স, ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি ইন কেইউ’ এবং ‘স্টুডেন্ট সাপোর্ট সার্ভিসেস ইন কেইউ’ শীর্ষক আরো চারটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালাটির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষে ভর্তিকৃত নবাগত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় সফলতা অর্জনের বিভিন্ন দিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়মকানুন, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ, শিষ্টাচার, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন দিকে আলোকপাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন মুদ্রিত সমন্বিত প্রসপেক্টাস বিতরণ করা হয়। কর্মশালার প্রথম দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুল এবং শিক্ষা স্কুলের আওতাধীন ছয়টি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।