প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে আমিই নিজেই বের হয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছি। শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ইডেন মহিলা কলেজ হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা যেসব রুমে থাকতো, সবগুলো ভাঙচুর-লুটপাট করা হয়েছে। তাদের রুমের সব কিছুতেই আগুন দেয়া হয়েছে। তাদের সার্টিফিকেট পুড়িয়ে দিয়েছে। যখন আমাকে জানানো হলো, আমি ছাত্রলীগের নেতাদের বললাম তোমরা হল থেকে বেরিয়ে আসো। কোনো ঝামেলায় যাওয়ার দরকার নেই। তারা কান্নাকাটি করেছে, তাদের সার্টিফিকেট পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, আমি বলেছি সব পাওয়া যাবে। কিন্তু কোনো ঝামেলায় যাবে না। হল থেকে চলে আসো। তারা বেরিয়ে আসে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীরা যখন নিজেকে ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান দেয়, তখনই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ করেছিল। ওই একদিনেই। এছাড়া তো তারা কোনো গণ্ডগোল করেনি। তারা সব সময় সহযোগিতার মনোভাব দেখিয়েছে, সাহসিকতা দেখিয়েছে। এখন তাদের উপর ক্ষোভ। যারা এই ধরনের ঘটনা ঘটালো, শিক্ষকের গায়ে হাত তুলল, ছাত্রদের মারলো, হলগুলো লুটপাট করলো, তাদের কি হবে?
সরকারপ্রধান বলেন, ৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ হানাদার বাহিনী গণহত্যা যখন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। রোকেয়া হলের প্রায় তিনশ মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করে। জগন্নাথ হল, ইকবাল হল, রোকেয়া হল...। মেয়েদেরকে ধর্ষণ করেছে, তুলে নিয়ে গেছে তাদের ক্যাম্পে। সেই ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর কি করেছে তারা! বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তুলে নিয়ে তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আবার সেই জায়গায় হল ভাঙ্গা, শিক্ষকদের গায়ে হাত তোলা এমনকি মহিলা শিক্ষক তাদেরকেও ছাড়েনি। ইডেনে মেয়েদেরকে খাম্বার সঙ্গে বেঁধে তাদের উপরে অত্যাচার, তাদেরকে নাকে খত দেয়া, কান ধরে উঠাবসা করা- এরকম নানারকম জুলুম অত্যাচার করেছে। তাদের অপরাধ কি? তারা ছাত্রলীগ করে। এভাবে ছাত্রলীগের কোনো রুম নেই যে সেগুলো ভাঙচুর লুটপাট বা অগ্নিসংযোগ করা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বাংলাদেশটাকে নরক বানানোর চেষ্টা করা হলো। তাই আমরা বাধ্য হয়েছি সেনাবাহিনী নামাতে। কারণ মানুষের জানমাল রক্ষা করা, এটা আমাদের কর্তব্য। যার ফলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।