দৈনিক শিক্ষাডটকম, নাটোর : নাটোরের নলডাঙ্গায় সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণের দায়ে মো. হাফিজুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে ৬০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে আসামীর উপস্থিতিতে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. হাফিজুল ইসলাম নলডাঙ্গার বাঙ্গালখলসী এলাকার মো. ইমান আলীর ছেলে।
মামলার বরাতে আইনজীবী আনিসুর রহমান বলেন, ভারতফেরত দুই সন্তানের জনক আসামী হাফিজুল ইসলাম দেশে ফিরে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট থেকেই ওই স্কুলছাত্রীকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করত এবং কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি ভিকটিম পরিবারের মাধ্যমে অভিযুক্তের পরিবারকে জানালে কোনো সুরাহা না করে ভিকটিমকে অপহরণের চেষ্টায় থাকে হাফিজুল।২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই স্কুলছাত্রী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে বের হলে তাকে মুখ চেপে ধরে অপহরণ করে প্রথমে নাটোরে পরে যশোরে নিয়ে যায় হাফিজুল।
এদিকে, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করে মেয়েকে না পেয়ে পরেরদিন তিনজনের নাম উল্লেখ করে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করেন ভিকটিমের বাবা। ওদিকে, যশোরের বেনাপোল সীমান্ত অতিক্রম করে ভিকটিমকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করে হাফিজুল। কিন্তু বর্ডারের অবস্থা ভালো না থাকায় ভিকটিমকে নিয়ে ঢাকায় গিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর আবার ভিকটিমকে ভারতে পাচারের জন্য যশোরে নিয়ে গেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. উজ্জ্বল হোসেন যশোরের কোতোয়ালী থানার পুলিশের সহযোগীতায় আসামীকে গ্রেপ্তার করে এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর দুই, তিন নম্বর আসামী মো. সিরাজ ও মো. সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে।
সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বিজ্ঞ আদালত মো. হাফিজুল ইসলামকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই আইনের ৭ ধারায় হাফিজুলের বিরুদ্ধে আবারও একই সাঁজা ও জরিমানা আদেশে দেন বিচারক। যাবজ্জীবনের দুইটি আদেশ অনুযায়ী হাফিজুল ইসলামকে ৬০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে এবং জরিমানার ৪০ হাজার টাকা ভিকটিম পাবেন বলে জানান, নাটোর বিশেষ ওই সরকারি কৌঁসুলি। এদিকে দুই, তিন নম্বর আসামী মো. সিরাজ ও মো. সিদ্দিকের ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকায় দাখিল কৃত মূল অভিযোগ পত্র থেকে তাদের নাম বাদ দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেও জানান বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি।