নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানী করার অভিযোগে ওই স্কুলের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা। মঙ্গলবার বিকেল গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে তুলারামপুর-শেখহাটি সড়কে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সহকারী অধ্যাপক রমেশ চন্দ্র অধিকারী, শেখহাটি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অসীম কুমার পাল,বিপ্রদা প্রসন্ন মল্লিক,অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক সুধীর কুমার পাল,স্মৃতি পাল,সুলভ অধিকারীসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, হাতিয়াড়া গ্রামের নিরোধ গোস্বামীর ছেলে গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুকান্ত কুমার গোস্বামী (৪০) শিক্ষকতার আড়ালে বেশ কিছুদিন যাবৎ মেয়েদের উত্ত্যক্ত ও শ্লীলতাহানী করে আসছেন। গত ১৮ জানুয়ারি বেলা ৩টার দিকে স্কুলের এক ছাত্রীকে পড়ানোর কথা বলে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলার একটি নির্জন শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যান তিনি। মেয়েটিকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় ওই শিক্ষক। ওই ছাত্রী সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি সহপাঠীদের জানান। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে গিয়ে মাকেও জানান।
তারা আরও বলেন, এ ঘটনার আগে করোনা টিকা নিয়ে নড়াইল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই মেয়েটিকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার অজুহাতে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন ওই শিক্ষক। মেয়েটি ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাকে পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেন তিনি। এই ঘটনা ছাড়াও সুকান্ত গোস্বামী আরও অনেক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করেছেন। আমরা এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা সুকান্ত গোস্বামীর অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। মানববন্ধন শেষে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল বের করা হয়।
গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মন্ডল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান,ভূক্তভোগী ওই ছাত্রীর মা গত ২২ জানুয়ারি ঘটনা উল্লেখ করে শিক্ষক সুকান্ত কুমার গোস্বামী বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন। পরে শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাটি জানিয়েছি। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মঙ্গলবার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সহকারী শিক্ষক সুকান্ত কুমার গোস্বামীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তের জন্য স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য রতন ভৌমিককে আহ্বায়ক,সহকারী প্রধান শিক্ষক শিখা রাণীকে সদস্য করে মোট ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক সুকান্ত কুমার গোস্বামী সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার প্রতিপক্ষরা মানববন্ধন ও মিছিল করেছে। ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো। আমি এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।