দৈনিক শিক্ষা ডটকম, নওগাঁ: নওগাঁর রাণীনগরের শিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছুটি চাইলে মানসিক রোগীর সনদ চান প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ সরকার।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই শিক্ষক মঙ্গলবার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোছা. নূরজাহান খানমের স্বামীর গত শুক্রবার (১০ মে) হার্ট অ্যাটাক করে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করানো হয়।
সেখান থেকেই প্রথম দিনই সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি মোবাইলে জানায়। এরপর তৃতীয় দিন স্কুলের সভাপতি সাইদার রহমান বাবুকে বিষয়টি জানায়। এরপর স্বামীর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গত বুধবার (১৫ মে) বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে স্বামী অসুস্থ ছিলো বলে চার দিনের ছুটির জন্য আবেদন জানায়।
এর পরের দিন প্রধান শিক্ষক তাকে বলেন আপনার গতকালের আবেদনের চারদিন ছুটি মঞ্জুর করতে পারবো যদি আপনি আপনার মানসিক অসুস্থতার জন্য একটা মেডিক্যাল সার্টিফিকেট এনে দেন।
এক পার্যায়ে সে নিজের জন্য মানসিক অসুস্থতার মেডিক্যাল সনদ দিতে অস্বীকার করলে প্রধান শিক্ষক তাকে হুমকি দিয়ে বলে এই চার দিনের ছুটি এবং ভবিষ্যতে স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য কোন ছুটি মুঞ্জুর করবেন না যতক্ষন না সে তার মানসিক অসুস্থ্যতার কোন মেডিক্যাল সনদ জমা না দিবে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী সহকারী প্রধান শিক্ষক মোছা. নুরজাহান খানম কান্না জরিত কন্ঠে দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমার স্বামী হার্ট অ্যাটাক করার কারণে তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছিলাম। সেখান থেকে প্রধান শিক্ষককে মুঠোফোনে বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে অবহিত করি।
এরপর বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ছুটির আবেদন করলে তিনি আমাকে মানষিক ডাক্তারের কাছে থেকে আমি মানষিক রোগী হয়েছি বলে একটি সনদ জমা দিতে হবে। তিনি আমাকে কৌশলে পাগল বানিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার পায়তারা করছে। আমি এ ঘটনার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্রনাথ সরকার দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ওই শিক্ষিকা এর আগে তার স্বামী অসুস্থ বলে আমাকে মোবাইলে জানায় কিন্তু সে আমাকে ছুটির কথা বলেননি।
এর চারদিন পর তিনি এসে আমার কাছে ছুটির আবেদন দেন এবং তিনি বলেন এরপর আমার অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি প্রয়োজন। তখন আমি তাকে বলেছি এভাবে তো আমি আপনাকে ছুটি দিতে পারছি না। আপনি স্বামীর টেনশনে মানসিকভাবে অসুস্থ আছেন ডাক্তারের এমন সার্টিফিকেট দিলে আমি আপনার ছুটি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে ছুটি মঞ্জুর করে দিতে পারবো।
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।