দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলেদের সংখ্যা কম দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন ছেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে তা জানতে শিক্ষাবোর্ড প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপের সময়ও এই বিষয়ে তথ্য জানার চেষ্টা করতে বলেছেন।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের অনুলিপি গ্রহণ করার পর দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এই উদ্বেগের কথা জানান। আজ রোববার সকাল ১০টায় বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফল হস্তান্তর করে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। পরে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে। শিক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। মেয়েদের হার অনেক বেড়েছে। প্রাথমিকে একসময় ৫৪ শতাংশ ছাত্রী যেত, এখন ৯৮ শতাংশ মেয়ে স্কুলে যায়। আর এখানে (এসএসসির ফল) ফলাফল দেকে আমি হিসাব করছিলাম, প্রত্যেকটা বোর্ডে আমাদের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত। মাত্র তিনটা বোর্ডে ছাত্রের সংখ্যা একটু বেশি। অধিকাংশ জায়গায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। এটা একদিকে খুশির খবর। কারণ নারী শিক্ষার ওপর আমরা বেশি জোর দিয়েছি। এইচএসসি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার আমরা দেখতে পাচ্ছি ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট শিক্ষার্থী ২০ লাখ ৩৮ হাজার ১৫০ জন। এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৩৬৪ জন। আর ছাত্রী সংখ্যা ১০ লাখ ৩৮ হাজার ৭৮৬ জন।
এগিয়ে। সেটা খুব ভালো কথা। কিন্তু তারপরও আমি বলবো এই বিষয়টায় আমাদের দৃষ্টি দিত হবে। আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, বৃত্তি দিচ্ছি। প্রাইমারি থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি।
ছেলেদের হার কমার কারণ জানার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিবিএসকে বলতে পারি জরিপের সময় এটা জানার চেষ্টা করতে। কী কারণে ছেলেরা কমবে? মেয়েরা বাড়লে খুশি হই। সমান সমান হলে ভালো। কিন্তু ছেলে কেন কমলো এটা জানতে হবে। ছেলেরা পিছিয়ে আছে কেন জানতেই হবে। এটা যার যার বোর্ডে খোঁজ নেবেন। কিশোর গ্যাং কালচার দেখতে পাচ্ছি। কাজেই এটা খতিয়ে দেখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমনও সময় গেছে যখন মাসের পর মাস গেছে, ছেলেমেয়ের রেজাল্ট পায়নি। আমরা ৬০ দিনের মধ্যে তা দিতে পেরেছি। স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে, শিক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। তারপরও আমরা বলবো, ছড়িয়ে ছিটিয়ে যারা বাকি আছে তাদের স্কুলে পাঠানো আমাদের দায়িত্ব।
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা পাস করেছে তাদের ও তাদের অভিভাবক, শিক্ষক সবাইকে আমার অভিনন্দন। যারা অকৃতকার্য হয়েছে, ফেল করেছে তাদের বলবো, মন খারাপ যাতে না করে। এবার হয়তো কোনও কারণে তারা পারেনি। তবে এজন্য বাবা-মা যেন তাদের গালাগাল না করেন। তাদের মন এমনিতেই তো খারাপ। কেন সে পারলো না সেটা খুঁজে বের করে পড়াশোনায় মনোযোগী করতে হবে।