জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক ও সদরঘাট এলাকার ফুটপাতে শ্রমজীবী ও হকারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। চাঁদাবাজির এ অভিযোগ জানিয়ে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন।
সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির ও সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সদরঘাট ফ্লাইভার পর্যন্ত এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে হকারি করে প্রায় শতাধিক লোক জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টায় এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপ এবং সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ পরিচয়ে পর্যায়ক্রমে দুইবার দল বেধে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা করা হয়। কোনো তাদের দাবি করা হকার টাকা দিতে না পারলে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। গত চার মাস থেকে এই অত্যাচার চলছে। বিভিন্ন জায়গায় বলেও হকারদের এই সংকটের সুরাহা করা সম্ভব হয়নি। চিঠিতে হকারদের ওপর গত দুই মাস ধরে চলমান এ জুলুম বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
বাহাদুর শাহ পার্ক ও সদরঘাট এলাকার হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন দোকান প্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা চাঁদা নেয়া হয়। এভাবে ওই এলাকায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০টি দোকান চাঁদা আদায় করা হয়।
বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হকারদের ওপর এভাবে জুলুম করা হচ্ছে। বিষয়টি জানানোর জন্য জগন্নাথের সভাপতি-সেক্রেটারিকে অনেকবার টেলিফোন করলেও তারা রিসিভ করেনি। এরপর গত ১৫ দিন আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতিকে বিষয়টি জানালে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। কিন্তু এখনও আমরা কোনো প্রতিকার পাইনি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছি।
সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কিছুদিন আগে সদরঘাট এলাকায় আমরা একটা প্রোগ্রাম করি। সেখানে ওই এলাকার হকাররা আমাদেরকে বিষয়টি জানায়। আমরা বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে জমা দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কেউ যদি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা তুলে তাহলে এর দায়ভার তো আমরা নেবো না। ক্যাম্পাসের আশেপাশে আমাদের কোনো কর্মী চাঁদাবাজি করে না, আর ছাত্রলীগে চাঁদাবাজির কোনো জায়গা নেই।
সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একটা অভিযোগ দিয়ে চিঠি দিয়ে দিলেই হলো নাকি? চাঁদাবাজির কোনো ভিডিও, রেকর্ডিং তো নেই। এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে শুধু ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করতে চাচ্ছেন। আর তারা যদি আমাদের কারও প্রতি চাঁদাবাজির প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।