জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের পর টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে মুখ খুললে ভুক্তভোগীকে শিবির ট্যাগ দিয়ে জেলে পুরে দেয়ার হুমকি দেন অভিযুক্তরা।
অভিযুক্তরা হলেন, দর্শন বিভাগের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মেহেদী হাসান ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ইকবাল মাহমুদ রানা। রানা অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তারা দুজনই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনের অনুসারী।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে জাবি প্রক্টর বরাবর অভিযোগ জমা দিয়েছেন রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইব্রাহিম জনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইব্রাহিম জনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, চড়-থাপ্পর দিয়ে জোরপূর্বক আমার বিকাশ ও নগদের পাসওয়ার্ড নেয়। এরপর মেহেদি আমাকে ইকবাল মাহমুদ রানার সঙ্গে বসিয়ে রেখে আমার মোবাইল নিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে নেয় এবং বিভিন্ন নাম্বারে রিচার্জ করে। তারা বললেন আমাকে মেরে শিবির ট্যাগ দিয়ে দেবে। এমনকি আমি যেনো মুখ না খুলি এই ভয় দেখিয়ে শিবির করি বলে জোর করে ভিডিও করে। তারা বলে আমি কোন বিচার পাবো না, প্রক্টরও নাকি বিচার করবে না।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইকবাল মাহমুদ রানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ারের বিষয়ে জানতে চাইলে সে ভুল স্বীকার করে পোস্ট মুছে দিয়েছে। কিন্তু তাকে মারধর ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
অভিযুক্ত মেহেদী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই ছেলে নিজে স্বীকার করেছে, সে শিবির করে। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। তাকে মারধর ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার সঙ্গে ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিলো এজন্য ফোনে ফ্লেক্সিলোড দিয়েছিলো।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী হলে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দেবে। কারো ব্যক্তিগত কোনো অপরাধের দায় ছাত্রলীগ নেবে না।
রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এমন ঘটনা কখনই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসুক। দোষীরা যেকোনো দলেরই হোক তারা পার পেতে পারে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দূর্নীতি বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন। আমরাও সেটাই করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। দোষীদের ছাড় দেয়া হবে না।