দৈনিক শিক্ষাডটকম, জবি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মারধরে অভিযুক্ত ছাত্রী তাসমিম সানজানা সৃষ্টির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিককে দেখা নেয়ার হুমকি দেয় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সৃষ্টির ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক। ফাহিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে জবি ছাত্রী হলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতি খাতুনকে রান্নাঘরে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করার অভিযোগ ওঠে সংগীত বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছাত্রী হলের হাউজ টিউটর ও প্রোভোস্টের নিকট লিখিত অভিযোগও দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইতি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতি খাতুন বলেন, আমি রান্না করছিলাম। পরে চুলা ফাঁকা থাকায় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে ছেড়ে দিই। কিন্তু আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। আমরা মরা বাপ তুলেও গালি দেয়। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চড় থাপ্পড়, কিল ঘুষি মারে। আমার পরের ঘটনা মনে নেই অজ্ঞান হয়ে যায়।
মারধর করা অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টি বলেন, জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করে। আমার সামনে তেড়ে আসে। এজন্য আমি কি বসে থাকব। আমিও মাইর খেয়েছি, আমিও অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট দীপিকা রানী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে এটা তোলা হবে।
জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইতির বক্তব্য নেয়ার পর অভিযুক্ত সৃষ্টির কাছে তার মন্তব্য জানতে ফোন দেন সাংবাদিকরা। এর জেরে সৃষ্টির ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। নিউজ করলে মামলার হুমকি দেন ফাহিম।
হুমকির ঘটনার কল রেকর্ডে শোনা যায়, ফাহিম ওই সাংবাদিককে মুঠোফোনে বলেন, এই নিউজ যদি হয়, তুই যদি জড়িত থাকিস তোর খবর আছে। তোর নামে মামলা হবে। তোর লাইফ কীভাবে হেল করতে হয়, আমি দেখব। তোর কী সাহস! তুই আজ দেখা কর। তোর খবর আছে।এ বিষয়ে হুমকি দাতা ফাহিম ইশতিয়াক বলেন, ওই সাংবাদিক আমার বান্ধবিকে কল দেয়। বান্ধবি কান্নাকাটি করে আমাকে সমস্যা সমাধান করতে বলে। তাই আমি ওই সাংবাদিককে কল দিয়ে কথা বলি। উত্তেজিত হয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফেলেছি।
হুমকিদাতা ফাহিম নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে পরিচয় দেন। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, এই ছেলে ছাত্রলীগের কোনো রাজনীতিই করে না। তাকে আমি চিনি না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এটি একটি নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করবেন। লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।