জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত ও মানসম্মত শৌচাগারের ব্যবস্থা। ফলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির মুখোমুখি হচ্ছেন এখানে পড়তে আসা নারী শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শৌচাগার সংকটে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তাদের দাবি বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে প্রশাসনের সমাধান করা দরকার।
সরেজমিন দেখা যায়, জবির টয়লেটগুলোর বেহাল অবস্থা। শৌচাগারগুলো ভেতর অন্ধকার। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নেই আলাদা কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা। ছেলে-মেয়ে সবাই একই ওয়াশরুম ব্যবহার করে। এতে নানা সমস্যায় পড়তে হয় নারী শিক্ষার্থীদের। নারীদের শারীরিক নানা সমস্যা থাকে, এমন সময় তারা জরুরি ভিত্তিতে ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারেন না। অপেক্ষা করতে হয় লম্বা লাইন শেষ হওয়ার জন্য।
তাছাড়া বিকেল ৪টায় সকল বিভাগে তালা ঝুলানো হয়, লাইব্রেরিতে পড়তে আসা বা ক্যাম্পাসে একটু শীতল হাওয়া উপভোগ করতে আসা নারী শিক্ষার্থীরা পড়ে যান বিপাকে। ওয়াশরুম বা পিরিয়ডের সমস্যা হলে ক্যাম্পাসে ওয়াশরুমে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই। যদিও অবকাশ ভবনের এক পাশে ওয়াশরুম রয়েছে কিন্তু সেখানে নেই ভালো দরজা। প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে যেতে হয় ক্যাম্পাসের মসজিদে। কিন্ত মসজিদে প্রবেশেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী ১৮তম আবর্তনের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা তিন বান্ধবী সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে একটু আড্ডা দিতে আসি। তখন আমাদের ওয়াশরুমের প্রয়োজন হলে ক্যাম্পাসের অবকাশ ভবনের নিচের ওয়াশরুম ব্যবহার করতে যাই। কিন্তু ওয়াশরুম যেমন অপরিচ্ছন্ন তেমনি দরজাগুলা ভাঙা। যা একজন নারীর জন্য এমন পরিবেশ মোটেও নিরাপদ না।
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে মেয়েদের জন্য ভালো কোনো ওয়াশরুম নেই। যেহেতু অফিসিয়ালি ক্যাম্পাস ৪টায় অফ হয়ে যায় তাই লাইব্রেরিতে পড়তে আসা ছাত্রীরা পড়ে যায় বিপাকে। যেই ওয়াশরুম আছে অবকাশ ভবনের নিচে সেখানে যাওয়ার অবস্থা নাই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা আল-আমীন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কমনরুমে ওয়াশরুম সমস্যা সমাধান করেছি। মেয়েদের জন্য স্যানেটারি বেন্ডিং মেশিনের ব্যবস্থাও আছে। আর অবকাশ ভবনের নিচের ওয়াশরুমটা বাইরের তাই ঠিক ঠাক করা হচ্ছে না। কিন্তু এই সমস্যা সমাধানের কাজ চলছে। ভিসি ম্যাম প্রতিনিয়তই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। আর মসজিদে মেয়েদের প্রবেশে কোনো অফিসিয়াল নোটিশ আসেনি। ভিসি ম্যামের সঙ্গে কথা বলব যেন যতক্ষণ মেয়েরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে পড়বে ততক্ষণ মসজিদের ওয়াশরুম ব্যবহার করতে পারে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, এত সমস্যা একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি প্রতিনিয়ত সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। মেয়েদের ওয়াশরুমের যে ব্যাপারটা তা আরো কিভাবে ঠিক ঠাক করা যায় সে বিষয়ে কাজ করব, আর সব সময়ই যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয় সেটিও আমি আবার সবাইকে জানিয়ে দেব।