পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও ট্রেজারারের বাসভবনের জন্য বাবুর্চি নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু ট্রেজারারের বাসভবনের বাবুর্চির বেতনের থেকে ভিসির বাবুর্চির বেতন বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে নানা সমালোচনা শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে বৈষম্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার বার্তা দিচ্ছে, তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মস্থলে একই পদের দুই কর্মচারীর ভিন্ন ভিন্ন বেতন নির্ধারিত হয়েছে।
যদিও জবি কর্তৃপক্ষের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী ওই দুই পদের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ বৈষম্য দূর করার সম্ভব বলেও মন্তব্য করেছেন জবি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্তারা।
এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ভিসির বাবুর্চিও রান্না করবেন, ট্রেজারের বাবুর্চিও রান্না করবেন। কিন্তু ভিসি স্যারের বাসার বাবুর্চির বেতন বেশি ধরার বিষয়টি কেমন যেনো লেগেছে। দুইটি পদের ক্যাটাগারি একই। একই যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবুও দুইজনের বেতন ভিন্ন। ভিসি স্যার বড় পদে আছেন তাই বাবুর্চির পদ বড় না হলেও বেতন বেশি করে তার মর্যাদাকেও বড়ো করে দেখানোর এ এক অপচেষ্টা মাত্র। বিষয়টি জবি ক্যাম্পাসে ‘হট টপিকে’ পরিনত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে বৈষম্য দূর করার শিক্ষা দেয়ার কথা। কিন্তু এখানে যা দেখছি, বসের পদের ওপর ভিত্তি করে কর্মচারীর বেতন নির্ধারণ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় যদি এমনটা করে, তবে শিক্ষার্থীরা শিখবে কি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভিস রুলস প্রণয়ন কমিটিতে থাকা এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এটা (বাবুর্চি পদে দুই বেতন) ইউজিসি থেকে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আমরা সেভাবেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। তবে একই পদে দুই গ্রেড থাকাটা এক রকম বৈষম্য বলে স্বীকার করেছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এটা বৈষম্য। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট চাইলে এটা সমাধান করে একই গ্রেডে দুইজন বাবুর্চির বেতন নির্ধারণ করে দিতে পারে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কুক পদে নিয়োগের বিষয়টি ইউজিসির নির্দেশিত। ইউজিসি বলেছে, উপাচার্যের বাসভাবনের জন্য ১৮ গ্রেডে এবং কোষাধ্যক্ষের বাসভবনের জন্য ২০ গ্রেডে বাবুর্চি নিয়োগ হবে। আমরাও তাই করেছি। চাইলেও এটি বদলানোর এখতিয়ার আমাদের নেই।