দেশের বর্তমান পরিস্থিতির প্রভাব ক্রীড়াঙ্গনেও পড়েছে। ক্রিকেটে সেটা একটু বেশিই। নিরাপত্তা সংকটে অনুশীলন করতে পারছিল না জাতীয় দল। আজ থেকে তাদেরও মাঠে নামার কথা। কারণ, নাজমুল হোসেন শান্তদের প্রস্তুত হতে হবে পাকিস্তান সফরের জন্য। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে ১৬ আগস্ট পাকিস্তান যাওয়ার কথা থাকলেও সাকিব আল হাসানের দেশে ফেরা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিষয় সামনে এসেছে।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীসের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকবে না। সাকিবও মনে করেন, জাতীয় দলে খেলতে বা দেশে ফেরা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না তাঁর।
সাকিব জাতীয় দলের ক্রিকেটার হলেও সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন মাগুরা-১ আসন থেকে। সরকার বিলুপ্ত হলেও ক্রিকেটার সাকিব জাতীয় দলের খেলোয়াড়। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলতে পারেন তিনি। জাতীয় দলে নির্বাচিত হলে তিনি খেলবেন বলে মনে করেন নাফীস, ‘উনি (সাকিব) যদি দলে নির্বাচিত হন, তাহলে তো স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশে এসে যোগ দিয়ে যাবেন বা দলে যোগ দেবেন। সেটা নির্বাচক প্যানেল সেটা ঠিক করবে। একটা ছোট উদাহরণ দিই, অনেক সময় খেলোয়াড়রা ব্যক্তিগত কারণে বা অসুস্থতার কারণে হোক সিরিজ খেলেন না। ব্যক্তিগত সেই জায়গাটা তো আমরা খেলোয়াড়দের দিয়ে থাকি। এখন পর্যন্ত আমাদের যে ভাবনা, ১২ তারিখ পর্যন্ত তার এনওসি দেওয়া আছে। সে সিলেকশন হবে কি হবে না, সেটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সিলেকশন কমিটির দায়িত্ব।’
জাতীয় দল নির্বাচকদের সঙ্গে সাকিবকে দলে নেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ‘তার পরিকল্পনা আমাদের জানতে হবে। পাকিস্তানের পর ভারতেও খেলতে যাবে কিনা, সেটা জানা দরকার। সাকিবের সঙ্গে কথা বলে বিষয়গুলো ঠিক করতে হবে।’
বিশ্বকাপের পর বৈশ্বিক টি২০ ক্রিকেট লিগে খেলছেন সাকিব। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর ক্রিকেট লিগ শেষ করে এখন খেলছেন কানাডার গ্লোবাল টি২০ লিগে। ১২ আগস্ট পর্যন্ত খেলার সুযোগ পাবেন তিনি। এ ব্যাপারে শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘সাকিবের ১২ আগস্ট পর্যন্ত এনওসি আছে। ১৩ আগস্ট তার দেশে আসার কথা, আমাদের কাছে রিপোর্ট করার কথা। আজকে যেহেতু ৭ আগস্ট, তার আরও দু-তিনটা খেলা আছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ করব এবং তার পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করব। নিরাপত্তার ব্যাপার তো রয়েছেই, শুধু সাকিব বলে কথা না। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার বিষয় আছে, আমাদের সিনিয়র ভাইদের নিরাপত্তার বিষয়ও আছে। রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী সাকিব এখন সংসদ সদস্য নন। তিনি একজন ক্রিকেটার।’
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বিতর্কিত হলেও সাকিব মনে করেন না জাতীয় দলের হয়ে খেলতে বাধার সম্মুখীন হবেন, ‘আমার মনে হয় না দেশের হয়ে খেলতে কোনো সমস্যা হবে। এখন মানুষ যা কিছু বলছে, তা ইমোশনাল। মাঠে ভালো খেললেই সবার সমর্থন পাব আশা করি।’ বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি দেশে ফিরে পাকিস্তানে খেলতে যাবেন কিনা? উত্তরে বলেছেন, এখনও ঠিক করেননি।