জাপান সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘দ্যা অর্ডার অফ রাইজিং সান, গোল্ড রেস উইথ নেক রিবন’ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি নিজ বাসভবনে তার হাতে এ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
জানা গেছে, একাডেমিক ক্ষেত্রে জাপানি অধ্যয়নের শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে জাপান সরকার এ সম্মাননা দিয়েছে।
এদিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে অধ্যাপক বারকাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ৪১ বছরের কর্মজীবনে তেমনই একটি ভূমিকা ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ প্রতিষ্ঠা। আবুল বারকাত ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে জাপানের ওডিএ প্রকল্প এবং জাপানের অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য বক্তৃতা দিয়েছেন, সমীক্ষা চালিয়েছেন এবং মূল্যায়ন প্রতিবেদন, প্রকাশনা বের করেছেন। তিনি ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পরিচালক হিসেবে জাপান স্টাডি সেন্টারের (জেএসসি) উন্নয়নে অবদান রেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শিনজো আবে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সফরের সময় ‘জাপান স্টাডি সেন্টার’ পরিচালিত গবেষণা কার্যক্রমকে জোরদার করার অঙ্গীকার করেছিলেন। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে স্টাডি সেন্টারকে বিভাগে উন্নীত করা হয়। এতে জাপানিজ স্টাডিজের ছাত্ররা স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে পারছেন। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ৩ নভেম্বর অধ্যাপক বারকাতকে জাপান সরকার পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ পুরস্কার দেয়ার পেছনে একটি বড় কারণ হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা। কোনো এরিয়াতে এ সম্পর্কিত স্টাডিজ বাংলাদেশে নেই। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে এ বিভাগ যাত্রা শুরু করে। একটি পূর্ণাঙ্গ বিভাগ প্রতিষ্ঠা লাভ করতে কারিকুলাম, জাপান সংশ্লিষ্ট একাডেমিক পড়াশোনাসহ অনেক কিছুই বাস্তবায়ন করতে কয়েক বছর সময় লেগেছে।
জাপান সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পাওয়া অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি না মানুষ পুরস্কারের জন্য কোনো কাজ করে কি-না। তবে আমি পুরস্কারের জন্য আজ পর্যন্ত কোনো কাজ করিনি। আমি জীবনে যা কিছু করেছি, যা ঠিক মনে হয়েছে তাই করেছি। আর অনুভূতি অবশ্যই ভালো। কারণ একটি নতুন স্বীকৃতি পেলাম। সব মিলিয়ে খারাপ না।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছর বসন্তকালে জাপান সরকার দেশটির নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশিদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখার জন্য বিশেষ পদক দিয়ে সম্মানিত করে থাকে। ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে জাপানের সম্রাট মেইজি অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান পুরস্কার প্রবর্তন করেন। এটি জাপান সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা।