দৈনিক শিক্ষাডটকম, জাবি : চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমিদখল ও মাদক কারবারের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের মতো একাধিক অভিযোগ তুলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের পদত্যাগ দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কর্মসূচি চলবে আগামীকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
আজ শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরের পাশে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আর্ট গ্যালারির সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জাহিদুজ্জামান শাকিল বলেন, 'আমরা মনে করি লিটন তার জুলুম, নিপীড়ন, স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে দায়িত্বের অবহেলা করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করেছেন। আমরা এমন কলঙ্কিত নেতা ক্যাম্পাসে চাই না। আমাদের এক দফা এক দাবি লিটনের পদত্যাগ চাই।'
এসময় কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক লেনিন মাহবুব, সহসভাপতি সাজ্জাদ শোয়েব চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকার, অর্থ সম্পাদক তৌহিদুল আলম তাকিদ, যুগ্ম সম্পাদক আরাফাতুল ইসলাম বিজয়সহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।
এদিকে, গত ২৩ জানুয়ারি সংগঠনের কর্মীদের খোঁজ-খবর না রাখা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় জমি দখল, নেতাকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, কর্মিসভা করেও দীর্ঘদিন ধরে হল কমিটি না দেয়া, নিজ হলকেন্দ্রিক চিন্তা-ভাবনা, নেতাকর্মীরা দেখা করতে চাইলে ব্যস্ততার অজুহাত দেখানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্যানেলের ছয়টি হলের নেতাকর্মীরা। পরে গত ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
গতকাল শুক্রবার লিটনের পদত্যাগ দাবিতে কালো পতাকা মিছিল করেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আকতারুজ্জামান সোহেলকে সভাপতি এবং ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান লিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যের ১ বছর মেয়াদি আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এই ঘোষণার তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নিয়ম থাকলেও ১১ মাস পর ৩৯০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। গত বছরের ৩ জানুয়ারি এই কমিটির মেয়াদ ফুরালেও নতুন কমিটি হয়নি। বর্তমানে কমিটির সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ প্রায় ১৫০ জনেরই ছাত্রত্ব নেই বলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।