জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাস আটকে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

জাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাস আটকে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, জাবি |

ঈদে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে বাসের টিকিট কাটতে নবীনগর গিয়েছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সজীব মন্ডল। কিন্তু সাধারণ সময়ের তুলনায় ভাড়া বেশি চা ওয়ায় হয় বাকবিতণ্ডা। সজীব বিষয়টি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের বন্ধুদের জানান। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেট) আটক করেন বাস। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে মারধরের অভিযোগ তুলে বাস কোম্পানির কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে  শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। 

সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার মধ্যে এসব ঘটনা ঘটে। 

ইংরেজি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের ছাত্র সজীব জানান, গাইবান্ধায় গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য ৩ এপ্রিলের বাসের টিকিট কাটতে তিনি নবীনগরের আলহামরা পরিবহনের কাউন্টারে যান। ওই কোম্পানির ৮০০, এক হাজার এবং ১২শ টাকা মানের তিন ধরণের এসি বাস ঢাকা-গাইবান্ধা রুটে চলাচল করে। এরমধ্যে সজীব এক হাজার টাকার ইকোনমি ক্লাসের বাসের (হিনো আরএম-২) টিকিট চাইলে কাউন্টার মাস্টার জানান ওই টিকিটের দাম বেড়ে দুই হাজার টাকা হয়েছে। এসময় তিনি ভাড়ার চার্ট দেখতে চান। একপর্যায়ে তার সাথে থাকা মোবাইল ক্যামেরায় ঘটনা ভিডিও করতে শুরু করেন।

সজীব জানান, ভিডিও শুরুর পর কাউন্টার মাস্টার ভিডিও বন্ধ করতে বলেন এবং তাকে ভেতরে গিয়ে সব দেখতে বলেন যে কোম্পানির দেয়া টিকিটের  দুই হাজার টাকা। এ নিয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, সেখান থেকে বের হয়ে হলের বন্ধুদের বিষয়টি জানাই। এরপর হল থেকে সবাই গিয়ে বাস আটক করে। কিন্তু চাঁদা নেয়ার বিষয়টি আমি জানি না।

আলহামরা পরিবহনের নবীনগর কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ঢাকা-গাইবান্ধা রুটের এসি বাসের টিকিট কাটতে আসেন। ওই রুটের ইকোনমি ক্লাস বাসের টিকিটের দাম স্বাভাবিক সময়ে এক হাজার টাকা থাকলেও ঈদে কোম্পানির পক্ষ থেকে তা বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করা হয়। বেশি ভাড়ার কথা শুনে ওই শিক্ষার্থী টিকিটের দাম কমাতে বলে। তখন আমি তাকে দাম কমানো যাবে না বলে জানাই। বলি, ‘কোম্পানি থেকে এটা করে দেয়া। আপনি আমার ওয়েবসাইট দেখেন। আমার দাম কমানোর সাধ্য নেই। আপনি যদি ঢাকায় কথা বলে ফ্রি করে নিতে পারেন আমার কোন সমস্যা নেই। কোম্পানি যে রেট দেয় আমাকে ওই রেটে বিক্রি করতে হয়।’

এরপর ওই শিক্ষার্থী চলে যান বলে জানান আলহামরা পরিবহনের নবীনগর কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা। দাবি করেন, সেখানে কোন মারামারি বা হেনস্তার ঘটনা ঘটেনি। টিকিটের দাম কমানো নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে।

সাভার কাউন্টারের কর্মকর্তা মামুন বলেন, ‘আমাদের নবীনগর কাউন্টারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সাথে টিকিটের দাম দিয়ে তর্কাতর্কি হয়। পরে সে সেখান থেকে চলে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস আটকায়। সন্ধ্যায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে আমার থেকে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়, না হলে বাসে আগুন দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়। পরে ৩৫ হাজার টাকায় সমাধান হয়। আমি টাকা পকেট থেকে বের করার পরই তা নিয়ে নেন ছাত্রলীগের নেতা নাহিদ।’

ওই নেতাকে আগে থেকে চিনতেন কি না- জানতে চাইল মামুন বলেন, শুরু থেকেই তিনি আমাদের সাথে কথা বলেছেন, টাকা দাবি করেছেন। তখন তার নাম শুনেছি। যে হলের ছাত্রের সাথে ঝামেলা হইছে তিনিও ওই হলের ছাত্র।’

যদিও ছাত্রলীগের উপ কর্মসংস্থান সম্পাদক নাহিদ ফয়সাল টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে  বলেন, ‘ইফতারের পর সোহেল ভাইসহ আমরা ডেইরি গেটে চা খাচ্ছিলাম। তখন একজন বাস আটকানো সম্পর্কে জানালে সোহেল ভাই আমার সিনিয়রদের বাস ছাড়ার বিষয়টি বললে তারা বাস ছেড়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। যদি কেউ চাঁদাবাজ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আর রাজনীতি করব না।’

যদিও ঘটনার সময় ডেইরি গেটে ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, বাসের মালিক পক্ষ প্রথমে সভাপতির কাছে আসলে তিনি ঘটনার কোন সুরাহা করতে পারবেন না বলে জানান এবং যারা বাস আটক করেছে তাদের সাথে কথা বলতে বলেন। এরপর টাকার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়।

এ বিষয়ে আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, চাঁদাবাজির ঘটনা কীভাবে ঘটল তা জানি না। যদিও কেউ টাকা নিয়ে থাকে তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সব প্রাথমিকে তারুণ্যের উৎসবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব নিয়ে কর্মসূচি - dainik shiksha সব প্রাথমিকে তারুণ্যের উৎসবে জুলাই-আগস্ট বিপ্লব নিয়ে কর্মসূচি ভর্তি হয়ে প্রতারিত হলে দায় নেবে না ইউজিসি - dainik shiksha ভর্তি হয়ে প্রতারিত হলে দায় নেবে না ইউজিসি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি: কপাল খুললো ভুল চাহিদায় সুপারিশ পাওয়াদের - dainik shiksha পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি: কপাল খুললো ভুল চাহিদায় সুপারিশ পাওয়াদের কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন শেষ হচ্ছে কাল - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদন শেষ হচ্ছে কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু রোববার - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু রোববার অনার্স ২য় বর্ষে ফের ফরম পূরণের সুযোগ - dainik shiksha অনার্স ২য় বর্ষে ফের ফরম পূরণের সুযোগ আলামত ধ্বংস বিভাগ থেকে বের হতো প্রশ্ন, কর্মচারী আকরামের স্বীকারোক্তি - dainik shiksha আলামত ধ্বংস বিভাগ থেকে বের হতো প্রশ্ন, কর্মচারী আকরামের স্বীকারোক্তি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.022699117660522