দৈনিক শিক্ষাডটকম, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হল সংলগ্ন জঙ্গলে বহিরাগত নারী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের সাময়িক বহিষ্কার, শিক্ষা সনদ বাতিল ও ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে। রোববার বিকেল ৩টায় এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় মীর মশাররফ হোসেন হল ও উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় অভিযুক্তদের মধ্যে যেসব শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে তাদের শিক্ষা সনদ বাতিল করা হয়েছে এবং তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রচলিত আইনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশুলিয়া থানায় বাদী হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত এবং অধিকতর তদন্তের জন্য ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত হাসানুজ্জামান ও মোস্তাফিজুর রহমানকে ক্যাম্পাস থেকে অবাঞ্ছিত ও তার শিক্ষা সনদ স্থগিত করা হয়। মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী ও সাব্বির হাসানকে অবাঞ্ছিত, সাময়িক বহিষ্কার ও শিক্ষা সনদ প্রদান স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সনদ স্থগিতের পাশাপাশি তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে এবং ক্যাম্পাস বহিরাগতদের প্রবেশ ও অস্থায়ী দোকানপাট নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ চারজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে নেওয়া অপর আসামিরা হলেন-সাব্বির হাসান, সাগর সিদ্দিক ও হাসানুজ্জামান।
রোববার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগমের আদালত তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সকালে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে হেফাজতে নিয়ে যায় আশুলিয়া থানা পুলিশ।
এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন জঙ্গলে বহিরাগত ওই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন অভিযুক্ত মামুন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে আনেন তিনি। পরে ক্যাম্পাসে আসলে তাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন অভিযুক্তরা।
এরপর তার স্ত্রীকে দিয়ে নিজের রেখে আসা জিনিসপত্র আনতে বলেন মামুন। মামুনের কথা মতো তার জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন ভুক্তভোগী নারী। পরে জিনিসপত্র নিয়ে মামুন হলের ভেতরের ওই কক্ষে রেখে আসেন। এরপর তার স্বামী অন্যদিক থেকে আসবে বলে ওই নারীকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে যান অভিযুক্তরা। সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী।