নিষিদ্ধ ঘোষণা করা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সব সম্পদ জব্দ করার পাশাপাশি সংগঠনের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, সদস্যদের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে সরকার। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সরকারকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, সরকার, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরসহ এর সব অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা জামায়াত ও ছাত্রশিবির যেসব বাধা-নিষেধের মধ্যে পড়বে, সেই বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে যেসব রেস্ট্রিকশন দেওয়া আছে, তা করতে পারবে না। এ ছাড়া সরকারকেও এই আইনে বেশকিছু ক্ষমতা দেওয়া আছে।
আরো পড়ুন : জামায়াত-শিবিরের অর্থায়ন বন্ধের তাগিদ
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২০(ক) ধারায় বলা হয়েছে, সরকার উক্ত সত্তার (সংগঠন) কার্যালয় যদি থাকে বন্ধ করে দেবে। ২০(খ) ধারায় বলা হয়েছে, ব্যাংক এবং অন্যান্য হিসাব যদি থাকে, অবরুদ্ধ করবে এবং উহার সকল সম্পদ জব্দ বা আটক করবে। ২০(গ) নিষিদ্ধ সত্তার সদস্যদের দেশত্যাগের বাধানিষেধ আরোপ করবে। ২০(ঘ) ধারায় বলা হয়েছে, সকল প্রকার প্রচারপত্র, পোস্টার, ব্যানার অথবা মুদ্রিত, ইলেক্ট্রনিক, ডিজিটাল বা অন্যান্য উপকরণ বাজেয়াপ্ত করবে। ২০(ঙ) ধারায় বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ সত্তা কর্তৃক বা উহার পক্ষে বা সমর্থনে যে কোনো প্রেস বিবৃতি, প্রকাশনা, মুদ্রণ বা প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসম্মুখে বক্তৃতা প্রদান নিষিদ্ধ করবে সরকার।
আরো পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের চোখে জামায়াত হবে ‘বোকো হারাম’?
এ ছাড়া ২০(২) ধারায় বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ সত্তা উহার আয় ও ব্যয় হিসাব সরকার কর্তৃক মনোনীত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করবে এবং আয়-ব্যয়ের সকল উৎস প্রকাশ করবে। ২০(৩) ধারায় বলা হয়েছে, যদি প্রতীয়মান হয় যে, তালিকাভুক্ত ব্যক্তি বা নিষিদ্ধ সংগঠনের সম্পত্তি অবৈধভাবে অর্জিত হয়েছে অথবা এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংগঠনে ব্যবহৃত হয়েছে, তাহলে উক্ত সম্পত্তি আদালত কর্তৃক রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে।