জামায়াত-শিবিরের অর্থায়ন বন্ধের তাগিদ - দৈনিকশিক্ষা

জামায়াত-শিবিরের অর্থায়ন বন্ধের তাগিদ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করলেই সন্ত্রাস বন্ধ হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দলটির অর্থায়ন বন্ধের তাগিদ দিয়েছেন তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, দলটির নেতা-কর্মীদের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। অন্য কোনো নামে যেন তারা রাজনীতিতে আসতে না পারে সেদিকেও সরকারকে নজর দেওয়ার পরামর্শ তাদের। ধর্মের নামে রাজনীতি পুরোপুরি বন্ধের আহ্বানও জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।

আটচল্লিশ বছর পর গত বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী ইসলামী ছাত্র শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এর মধ্য দিয়ে দেশের মহান স্বাধীনতার বিরোধীতাকরা দলটির কার্যক্রম অবৈধ হলো। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন মহল থেকে দলটির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি আসছিল।

জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। একই সঙ্গে তারা বলছেন, দলটির অর্থনৈতিক কাঠামো বেশ শক্তিশালী। তাদের তৎপরতা বন্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দলটির নেতা কর্মীদের বিচার করতে হবে।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘এই জঙ্গীদের অর্থায়ন বন্ধ হবে না, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসের যে রিক্রুটমেন্ট সেটাও বন্ধ হবে না। একই সঙ্গে জামায়াতের যারা নেতা বা সংগঠক আছে যারা সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে যেটা সন্ত্রাস বিরোধী আইনে সম্ভব।’

ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি দেশের মানুষ চায় না তারই প্রতিফলন ঘটেছে বলে জানান ইতিহাস বিশ্লেষক মুনতাসীর মামুন। তিনি বলেন, ‘ধর্ম রাজনীতিতে আনা মানেই হচ্ছে একটা বিড়ম্বনার সৃষ্টি করা। এটা থেকে আমরা মুক্তি চাই। সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। কিন্তু দুটো বিষয়, একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া, একটা কার্যকর করা। সবকিছু ভেবে চিন্তে কার্যকর করতে হলে সবাইকে নিয়ে, সমমনাদের নিয়ে এগোতে হবে।’ 

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। আর শিবিরের আগের নাম ছিল পাকিস্তান ছাত্র সংঘ। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের পূর্ব লগ্নে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার জন্য এই সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সরাসরি দায়ী করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় দলটির সাবেক বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সাজা হয়েছে। অনেকের মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জামায়াতে ইসলামীকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে পঁচাত্তরে সপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর রাজনৈতিক নানা পট পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হয় জামায়াত।

২০০১ খ্রিষ্টাব্দে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে দলটির কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায়ও স্থান পান। যা নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল।

২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ আগস্ট হাইকোর্টের এক রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৮ ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।

হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে জামায়াতে ইসলামী। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখে। ফলে দলটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার হারায়। তবে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও রাজনীতির মাঠে তাদের সক্রিয় দেখা গেছে।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যে পর্যায়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে এর জন্য সরকার জামায়াত ও শিবিরকেই দায়ী করছে। এই সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু হতাহত হন। সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা ১৫০ আর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, দেশজুড়ে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ২৬৬ জন।

সরকারের দাবি, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াত–শিবিরের নেতাকর্মীরা ছদ্মবেশে প্রবেশ করে সহিংসতা উসকে দেয়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভি, বনানীর সেতুভবন, মহাখালির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, মেট্রোরেল স্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়।

মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036411285400391