বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ভুয়া নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে নরসিংদী মনোহরদীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় অর্ধশত শিক্ষক চাকরি করছেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরেও এ-সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে অনেক আগেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সেগুলো তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দিয়েছিলেন ইউএনও। কিন্তু এরপর সাত মাস পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন দেননি ওই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে মনোহরদীর ইউএনও রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে গত ৩০ মার্চ তদন্ত করে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিধিমতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছি; কিন্তু সাত মাসেও কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। সাম্প্রতিক সময়েও ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তাগাদা দিয়েছি। সে সময় তিনি জানিয়েছেন, তদন্ত কার্যক্রম চলমান। নোটিশও প্রদান করেছেন।
এদিকে এনটিআরসি সনদ ও সুপারিশে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে মনোহরদীর প্রায় ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এসব প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ৫০ জন শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ১০ শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই অভিযোগ রয়েছে উপজেলার কয়েকটি মাদরাসার ক্ষেত্রেও।
উপজেলার চরসাগরদী আলিম ও তারাকান্দি টি কিউ এ এইচ বালিকা দাখিল মাদরাসায় জাল জালিয়াতির মাধ্যমে রেজুলেশন করে ভুয়া এনটিআরসি সনদ ও সুপারিশে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে চর সাগরদী আলিম মাদরাসায় গত ১ অক্টোবর গভর্নিং বডির একটি সভা হয়। সেখানে গভর্নিং বডির অগোচরে মাদরাসার অধ্যক্ষ আ. রহিমের বিরুদ্ধে ভুয়া এনটিআরসি সনদ দিয়ে পাঁচজন শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্নের অভিযোগ উত্থাপিত হলে এ অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি ও খিদিরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জামিল বলেন, বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করা হয়েছে। আবার উপজেলার শেখেরটেক মাদরাসা সুপার আব্দুর রবের যোগসাজশে তিনজন শিক্ষক জাল এনটিআরসি সনদ ও সুপারিশ নিয়ে মাদরাসায় যোগদান করতে আসেন। মাদরাসার সভাপতি ও কাচিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোবারক হোসেন কনকের হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়। পরে বিপদ বুঝে জালিয়াত শিক্ষকরাও তড়িঘড়ি করে সেখান থেকে সটকে পড়েন।