জাল সনদে প্রধান শিক্ষক হয়ে লুটপাট! - দৈনিকশিক্ষা

জাল সনদে প্রধান শিক্ষক হয়ে লুটপাট!

রাজশাহী প্রতিনিধি |

অবৈধ দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল বিএড সনদে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন তিনি। পরে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছেন। স্বাক্ষর জাল করে নিজের আর্থিক অনিয়মের বৈধতার অনুমোদন দিয়েছেন নিজেই। নৈশ প্রহরীকে করেছেন চাকরিচ্যুত। তিনি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন।

আলোচিত এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। শিক্ষা অফিসের তদন্তে সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচারণ, আর্থিক দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলেও নেওয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে মো. আলাউদ্দিন নিয়োগ পান ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবর। এ পদে তিনি উচ্চআদালতের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যাওয়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুয়া বিএড ডিগ্রির সনদ দাখিল করে নিয়োগ নেন। প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পর থেকে জড়িয়েছেন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে। তৎকালীন সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বিদ্যালয়ের ৩৪ বিঘা আবাদি জমি ও পুকুরের ৯০ লাখ টাকা আত্মসাতের বৈধতার অনুমোদন এবং নৈশ প্রহরীকে চাকরিচ্যুত করেন।

চাকরিচ্যুত নৈশ প্রহরি আলমগীর বলেন, আমাকে প্রধান শিক্ষক ঠিকমতো বেতন দিতেন না। একদিন বলেন, তোমার চাকরি নেই। তারপর জানতে পারি, সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। 

বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন সরকার জানান, যে রেজুলেশনে নৈশপ্রহরীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং আর্থিক হিসাবের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে সেই স্বাক্ষর তার নয়। 

অভিযোগ আছে, বিতর্কিত এই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে নিয়মিত না এলেও হাজিরা খাতায় ১ মাসের স্বাক্ষর এক দিনেই করেন। 

ডিজিটালাইজেশনের নামে অবৈধভাবে শিক্ষার্থীদের থেকে প্রতিবছর ২৫০ টাকা করে তুলে ৯ বছরে প্রায় ৭ লাখ ৪৭ টাকা আত্মসাৎ করেন। যদিও শিক্ষার্থীদের থেকে এ খাতে টাকা ওঠানোর কোনো নিয়ম নেই। এনটিআরসিএ থেকে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের থেকে অবৈধভাবে আদায় করেন ৪৩ হাজার টাকা। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বকালীন ৯ বছরে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাবও সংরক্ষিত নেই। ১৩ সহকারী শিক্ষকের মধ্যে ১২ শিক্ষক অসদাচরণের অভিযোগ করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং জেলা শিক্ষা অফিসে।

তবে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীনের দাবি, তার সনদ দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটির মিরপুর ক্যাম্পাস থেকে নেওয়া হয়েছে। তবে সার্টিফিকেটে ধানমন্ডি ক্যাম্পাসের ঠিকানা লেখা আছে- জানালে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি আরও দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। 

জেলা শিক্ষা অফিসার পুনরায় তদন্ত শুরু করলেও প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতায় তদন্ত কাজও বন্ধ! সনদ জালিয়াতির বিষয়ে জানেন না তদন্ত কর্মকর্তারা। 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির বিষয়টি জানা নেই। তদন্ত শেষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

 

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030269622802734