জিইডির এইচএসসির মান বন্ধের বিরোধিতায় মিলন - দৈনিকশিক্ষা

জিইডির এইচএসসির মান বন্ধের বিরোধিতায় মিলন

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

জেনারেল এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট (জিইডি) কোর্স করা শিক্ষার্থীদের এইচএসসির সমমান দেয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের (ইআরআই) চেয়ারম্যান ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন। তিনি বলেছেন, জিইডি কোর্সকে এইচএসসির সমমান দেয়া বন্ধ করা উচিত হয়নি। 

শুক্রবার সকালে 'বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা: সংকট ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে নাগরিক ফোরাম।

মিলন বলেন, জিইডির সমমান বন্ধ করে দেয়া উচিত হয়নি। যারা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারে না এ কোর্স তাদের জন্য। জিইডি থাকা প্রয়োজন। এ কোর্সের পরীক্ষা নেয় আমেরিকা, দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় কি করলো সমমানের ক্ষেত্রে তা গুরুত্বপূর্ণ না। আমেরিকার হাইস্কুল গ্রাজুয়েটরা জিইডি, এসএটি দেয় এক্সট্রা যোগ্যতা দেখানোর জন্য। এ কোর্সগুলো সবাই করে। 


 
সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পরিচালিত জিইডি সেন্টারে খুবই দক্ষ শিক্ষকরা যত্নসহকারে পাঠদান করিয়ে আসছেন। জিইডি আমেরিকান হাইস্কুল সমমানের ডিপ্লোমা। এটা  আমেরিকার কাউন্সিল অব এডুকেশনের অধীনস্ত মূলধারার শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত।  

জিইডি পাসের প্রক্রিয়া ও পাসের হার সম্পর্কে মিলন বলেন, অনেকের ধারণা এটা খুব সহজে পাস করা যায় কিন্তু বাস্তবে মোট ৪০০ নম্বরের জিইডি কোর্সের পরীক্ষায় পাসের হার মাত্র ৬০ শতাংশ এবং উত্তীর্ণদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ ২৫০ নম্বর পায়। প্রতি বিষয়ে পাস মার্ক ৪০ কিন্তু মোট পাচঁটি বিষয়ের নেয়া পরীক্ষায় ২২৫ পেতে হয়। 

তিনি আরো বলেন, আবার অনেকেই বাংলাদেশ থেকে জিইডি, এসএটি পরীক্ষা দিয়ে ভালো রেজাল্ট করলে তারা বিদেশে উচ্চতর শিক্ষার জন্য যেতে পারতেন এবং গ্রাজুয়েশন ও আন্ডার গ্রাজুয়েশন করতে পারতেন। সেই জায়গাটি হঠাৎ করে সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। অতএব আমাদের যারা এই ইন্টারমিডিয়েট সমমানের পরীক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে পারতেন সে পথটি চিরতরে বন্ধ হয়ে গেলো। যেসব ছাত্র-ছাত্রী বিদেশে পড়ালেখা করছেন তারা দেশে এসে কোনো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারবেন না

মিলন বলেন, আমার কাছে আশ্চর্য লাগে এদেশের সরকার প্রধান কথায় কথায় ইউরোপ আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করেন কিন্তু শিক্ষা ক্ষেত্রে কেনো তারা তাদের অনুসরণ করেন না!

সম্প্রতি জেনারেল এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট (জিইডি) কোর্স করা শিক্ষার্থীরা আর এইচএসসির সমমান পাবেন না মর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা। এ কোর্স করে এতোদিন শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশী শিক্ষাক্রম অনুযায়ী দুই বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট ( এইচএসসি) সমমান পেতেন। সেটা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতেন।  কিন্তু তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জিইডি কোর্স করা শিক্ষার্থীদের এইচএসসি সমমান সনদের জন্য আবেদন না করতে ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশকে পেছনে ফিরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা মানুষ কখনো মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, শিক্ষা বিষয়টি আসলে কি? এর ব্যাখ্যা অনেকে অনেকভাবে দিয়েছেন। আমি মনে করি হাজার বছর আগে আদিম সমাজে মানুষ যেভাবে বাস করত আর আজকে যেভাবে বাস করে এ দুইয়ের মধ্যে যে ব্যবধান তাই শিক্ষা।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি দেশের একটি নিজস্ব স্বকীয়তা, চিন্তাধারা, মানসিকতা, ধর্ম, মানবিক আচরণ, কৃষ্টি-সংস্কৃতি থাকে। যদি তার পরিপন্থী কিছু সে দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়, তাহলে তা কোনো দিন ভালো হয় না। আমরা শুনেছি সরকারের এক মন্ত্রী নিজেই বর্তমান পাঠ্যক্রমের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন এ দেশের শিক্ষাকে ধ্বংস করা হয়েছে। শিক্ষার উদ্দেশ মানুষকে সভ্য করা। কিন্তু যে শিক্ষা মনকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে দেয়, সেটা সুশিক্ষা না। আজকে বর্তমান সরকার যে পাঠ্যক্রম চালু করেছে সেখানে শিশুর মনকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এভাবে কোনো সভ্য জাতি গড়ে উঠতে পারে না।

যুক্তরাজ্য কীভাবে বিশ্বের শক্তিশালী দেশ হয়েছে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়েছে কারণ, বিশ্বের সবচেয়ে নামি-দামি ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় তাদের ৫০-৭৫টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। কিন্তু সে তালিকার এক হাজারের মধ্যেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেই। শিক্ষা ব্যবস্থায় যদি আমরা পিছিয়ে পড়ি অথবা শিক্ষার নামে অশিক্ষা কুশিক্ষা অনুসরণ করি তাহলে বাংলাদেশের পরিণতি কি হবে? তাহলে সরকার কি দেশকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য অশিক্ষা-কুশিক্ষা দিচ্ছে।

নাগরিক ফোরামের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহিল মাসুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. পারভেজ হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ কামরুল আহসান ও নাগরিক ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ নুরুজ্জামান।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE   করতে ক্লিক করুন।

 

৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034551620483398