আগামী জুন মাসের শেষের দিকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষা। ঈদুল আজহার আট থেকে দশ দিন পর জুনের শেষ সপ্তাহে এ পরীক্ষা শুরুর তারিখ নির্ধারণের বিষয়ে ভাবছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। সারা দেশের নয়টি সাধারণ ধারার শিক্ষা বোর্ডে অধীনে এইচএসসি, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম, বিএমটি ও ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় সারা দেশের সাড়ে ১৩ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার রুটিনের খসড়া প্রস্তুত করার কাজ শিগগিরই শুরু হবে। বোর্ডগুলোর পক্ষ থেকে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী খসড়ায় সংজোযন, বিয়োজন ও ক্ষেত্র বিশেষ পরিমার্জনের পর অনুমোদন মিললে চূড়ান্ত রুটিন করা হবে।মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত রুটিন প্রকাশ করবে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
দায়িত্বশীল এক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, জুন মাসের মাঝামাঝি পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ উৎসব উদযাপনে অনেকেই পরিবার নিয়ে কর্মস্থলের বাইরে নিজ নিজ গ্রামে যান। তাই এ উৎসবের পর এক সপ্তাহ থেকে দশ দিনের সময় দেয়া হবে পরীক্ষার্থীদের। ঈদ উৎসব শেষ করে পরীক্ষায় বসবেন পরীক্ষার্থীরা। এ পরিস্থিতিতে জুনের শেষ সপ্তাহে পরীক্ষা শুরু করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। রুটিনের খসড়া প্রস্তুতের কাজ এখনো বাকি থাকলেও শিগগিরই এ কাজ শুরু হবে।
চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে এইচএসসি ও সমমানের নির্বাচনী পরীক্ষা আয়োজন করছে কলেজ-মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলো। মার্চে প্রকাশ করা হবে টেস্টের ফল। এরপর ফরম পূরণ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্তারা।
জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর মোর্চা আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ঈদুল আজহার পর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ পরীক্ষার রুটিনের খসড়া এখনো করা হয়নি। খসড়া রুটিন প্রস্তুত করে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে অনুমোদন নিতে হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে বোর্ডগুলো চূড়ান্ত রুটিন প্রকাশ করবে।
জানতে চাইলে শিক্ষা বোর্ডগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের মোর্চা আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপকমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ঈদুল আজহার আট থেকে দশদিন পর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু করার তারিখ নির্ধারণের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। শিগগিরই রুটিনে খসড়া প্রস্তুত করতে আমরা বসবো।
বিগত বছরগুলোর রুটিন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সাধারণত এইচএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় অংশের পরীক্ষা শেষ করতে ৪০ থেকে ৪৫ দিন সময় প্রয়োজন হয়। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়ার জন্য দশ দিন সময় লাগে।
সর্বশেষ ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে সব বিষয়ে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে করোনা মহামারির থাবায় এ পরীক্ষা নেয়া যায়নি। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। এরপর থেকে সিলেবাস কমিয়ে এ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। সাধারণত এপ্রিলে শুরু হতো এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এ পরীক্ষাকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক সময়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে শিক্ষা প্রশাসন। সেইসঙ্গে সিলেবাসও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া চলছে। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিলো আগস্টের মাঝামাঝি। তা এগিয়ে নিয়ে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে জুনের শেষ দিকে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।