বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘যারা জ্বালাও-পোড়াও করে, রেললাইনের স্লিপার তুলে ফেলে, কেটে দেয়- তারা পরাজিত শক্তির দালাল। মনে রাখতে হবে- এরা পরাজিত শক্তির দোসর। সম্মিলিতভাবে এদের ‘না’ বলুন। এদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। খুনি, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবাজদের বাংলাদেশের মাটিতে কোনো স্থান নেই।’’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। এ দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে। তারা অবাধে ভোটের অধিকার প্রয়োগ করবে, শান্তিতে বাস করবে, উন্নত জীবন পাবে- সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এ দেশকে আর কখনো ওই পরাজিত শক্তির হাতে তুলে দেবো না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে চলবে।’
আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস-সহিংসতার কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে যাচ্ছে। তাদের আন্দোলন কী, অবরোধ-হরতাল! নেতাদের দেখা নেই, কয়েকটা গাড়ি, বাস আর মানুষ পোড়ানো, রেললাইন কেটে দেয়া- এটাই হচ্ছে তাদের হরতাল। এটাই হচ্ছে তাদের আন্দোলন।’
তিনি বলেন, ‘এখন দেশের বিরুদ্ধে তাদের নানারকম চক্রান্তও শুরু হয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনের আগেই এমন চক্রান্ত হয়। কিন্তু এ দেশের মানুষের শক্তি হচ্ছে বড় শক্তি, আমি যেটা বিশ্বাস করি। সেই শক্তি আছে বলেই আমরা একটানা তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি।’
বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস-নৈরাজ্য রুখে দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের প্রতিটি জায়গায় যেখানে বাস আছে, রেললাইন আছে, যেখানে এরকম (রেলপথ তুলে ফেলা) ঘটনা ঘটবে, সঙ্গে সঙ্গে জনগণকে মাঠে নামতে হবে। তাহলেই এরা (অবরোধকারী দুর্বৃত্ত) হালে পানি পাবে না।’
তিনি বলেন, ‘এরা ধ্বংস করতে পারে। এরা মানুষের জন্য সৃষ্টি করতে পারে না। এরা মানুষ খুন করতে পারে, কিন্তু মানুষের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারে না। এরা মানুষের সর্বনাশ করতে পারে, মানুষের জীবনটা উন্নত করতে পারে না। কাজেই তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। আর কোথাও যদি এই ধরনের রেলের স্লিপার তুলে ফেলে কিংবা আগুন দেয়- যখনই করতে যাবে, সরাসরি তাদের ধরতে হবে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, শহীদ বুদ্ধিজীবী ফয়জুর রহমান আহমেদের ছেলে ও লেখক-শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলিম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর লেখা ‘শেখ মুজিব’ গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত অংশ পাঠ করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ। পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।