মোবাইল ফোন ছাড়া দিনের একটি মুহূর্তও চিন্তা করা যায় না এখন। কারণে-অকারণে মোবাইল ফোনের পর্দায় চোখ রাখতেই অভ্যস্ত আমরা। অবস্থা এমন বেগতিক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, টয়লেটেও এখন ফোন আমাদের নিত্যসঙ্গী! আপাতদৃষ্টিতে খুব সাধারণ মনে হলেও এই অভ্যাসই গুরুতর অসুখের কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, দীর্ঘসময় ধরে মোবাইল হাতে টয়লেটে বসে থাকলে আমাদের মলদ্বারে বাড়তি চাপ পড়ে।
বেশির ভাগ ব্যবহারকারীই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ইত্যাদি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মগুলোতে একবার লগ ইন করলে সহজে বের হতে পারেন না। রিলস বা শটসে এরা এতোটাই বুঁদ হয়ে থাকেন যে, সময়ের হিসাব থাকে না। যতক্ষণ না ভিডিও শেষ হয়, ততক্ষণ এরা একই ভঙ্গিতে টয়লেটের কমোডে বসে থাকেন।
এমনকি মলত্যাগ সম্পন্নের পরও ভিডিও শেষ না হওয়া পর্যন্ত এরা টয়লেট থেকে বের হন না। দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় একভাবে বসে থাকার ফলে মলদ্বারের শিরার ওপর চাপ পড়ে।
এতে দীর্ঘমেয়াদে গ্যাসের সমস্যা এবং হেমোরয়েড বা পাইলসের মতো রোগ দেখা দিতে পারে। এমনকি মলদ্বার থেকে রক্তপাতও হতে পারে।
এ ছাড়া ওয়াশরুম বা টয়লেটের আর্দ্র ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। ফোন নিয়ে টয়লেটে ঢুকলে ফোনের গায়েও সে ব্যাকটেরিয়া লেগে যায়। যা পরবর্তীকালে হাত থেকে মুখে ওই ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের আশঙ্কা থাকে।
একাধিক গবেষণা বলছে, মোবাইল ফোনে টয়লেট সিটের চেয়েও বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। টয়লেটে মোবাইল হাতে প্রবেশের ফলে এর বাইরের কভারে ই কোলাই, সালমোনেলা এবং সি ডিফিসিলের মতো জীবাণু এসে জমা হয়। এতে মূত্রনালীর সংক্রমণসহ পেটের নানারকম অসুখ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
তাছাড়া টয়লেটে ফোন নিয়ে গেলে আমাদের মনোযোগ সেটির ওপরই থাকে। এতে শরীরের স্বাভাবিক বিপাকক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। ফলে মলত্যাগে অসুবিধাসহ কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে বলে কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা ১০ মিনিটের বেশি টয়লেটে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা পেতে মোবাইল ফোন নিয়মিত স্যানিটাইজ করাও জরুরি।
তথ্যসূত্র: নিউজ এইটি