টাউট আইনে বাড়ছে সাজা, খসড়া প্রস্তুত - দৈনিকশিক্ষা

টাউট আইনে বাড়ছে সাজা, খসড়া প্রস্তুত

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সরকারি প্রায় সব সেবা প্রতিষ্ঠান ঘিরে গড়ে উঠেছে বড় দালাল সিন্ডিকেট। সামান্য অর্থের বিনিময়ে সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও পদে পদে বাড়তি টাকা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে মানুষ। এদের দৌরাত্ম্য কমাতে মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলেও তাতে জনগণ স্থায়ী স্বস্তি পাচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে ১৪৫ বছরের পুরোনো টাউট আইন, ১৮৭৯ হালনাগাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ আইনের আওতায় থাকছে আদালত, থানা, হাসপাতাল, ভূমি, রাজস্ব, রেজিস্ট্রি, পাসপোর্ট অফিস ও সরকারি লাইসেন্স প্রদানকারী দপ্তর। তাছাড়া রোড ট্রান্সপোর্ট অফিস, রেলওয়ে স্টেশন, টার্মিনাল, পাবলিক রিসোর্ট ও সরকারি সেবা প্রদানকারী যে কোনো অফিসে দালালদের তৎপরতার বিষয়ও আইনটিতে উল্লেখ থাকছে। অর্থদণ্ড ও সাজার মেয়াদ বৃদ্ধির চিন্তা চলছে।

গত বছরের ২৬ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক সম্মেলনে টাউট আইন যুগোপযোগী করার প্রস্তাব আসে। এর সপক্ষে যুক্তি হিসাবে দেখানো হয়, বিদ্যমান আইনটির ৩৬ ধারা অনুযায়ী সুপ্রিমকোর্ট, জেলা জজ, দায়রা জজ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলার কালেক্টরের নিচে নন-এমন রাজস্ব কর্মকর্তাকে টাউটদের তালিকা প্রণয়ন করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

তাছাড়া আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি তিন মাস কারাদণ্ড অথবা ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড, যা অপর্যাপ্ত। তখন প্রস্তাব করা হয়-অন্যান্য দপ্তরের টাউট বা দালালদের প্রকাশ্য তালিকা প্রণয়নের বিধান রাখা যেতে পারে। তাছাড়া সর্বোচ্চ শাস্তি ছয় মাস কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখা যেতে পারে।

ডিসি সম্মেলনে আসা প্রস্তাবের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২৭ মার্চ জননিরাপত্তা বিভাগে একটি পত্র পাঠায়। সে অনুযায়ী আইনটির প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে হালনাগাদ ও যুগোপযোগী করে বাংলায় খসড়া প্রস্তাব প্রণয়ন করে পাঠানোর জন্য পুলিশ অধিদপ্তরকে ২৪ এপ্রিল অনুরোধ করে জননিরাপত্তা বিভাগ। পুলিশ অধিদপ্তর ১৩ জুলাই বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করা খসড়া প্রস্তাব পাঠায়। এর মধ্যে ১২ জুন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব মো. হান্নান মিয়াকে পরামর্শক (আইন ও বিধি) পদে নিয়োগ করা হয়।

আইনের খসড়ায় যা রয়েছে : প্রস্তাবিত আইনের ২ ধারায় টাউটের বিষয়ে বলা হয়েছে, যিনি কমিশনের ভিত্তিতে বিরোধী পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের জন্য সুবিধার ব্যবস্থা করেন বা মতবিরোধের অবসান ঘটান বা যিনি একজন ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে লেনদেনের ব্যবস্থা করেন। ৪ ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনে টাউট বলে ঘোষিত হওয়ার স্থানে গণ্য হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।

৪(১) ধারায় রয়েছে-যিনি কোনো আইন পেশাজীবীর কাছ থেকে অবৈধ অর্থ লাভের বিনিময়ে উক্ত আইন পেশাজীবীর জন্য আইন পেশা সম্পর্কিত যে কোনো কর্মসংগ্রহ করেন, অথবা যে কোনো আইন পেশাজীবী বা আইন পেশায় সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে অবৈধ অর্থ লাভের বিনিময়ে তাদের জন্য উক্তরূপ কর্মসংগ্রহের প্রস্তাব দেন। আইনে ৪(২) ধারায় এ আইনে অপরাধের বিষয়ে আরও বলা হয়, কোনো ভোক্তাকে কোনো ধরনের সেবা গ্রহণ বিষয়ে কোনো সেবা প্রদানকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অবৈধ অর্থ লাভের বিনিময়ে কর্মসংগ্রহের প্রস্তাব দেয়।

প্রস্তাবিত আইনের ৪(৩) ধারায় অপরাধের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি বা রাজস্ব আদালত বা কোনো রাজস্ব অফিস বা রেজিস্ট্রি অফিস বা থানা বা হাসপাতাল বা পাসপোর্ট অফিস বা রোড ট্রান্সপোর্ট অফিস বা সরকারি লাইসেন্স প্রদানকারী দপ্তর বা সরকারি সেবা প্রদান সংক্রান্ত অফিস বা কোনো পেশাজীবীর দপ্তর থেকে সেবা প্রদানের আইনি পদ্ধতি থাকার পরও দ্রুত ও সহজে কাজ করে দেওয়ার আশ্বাসের ভিত্তিতে কোনো সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে অবৈধ অর্থ গ্রহণ করা। ৪(৪) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো দপ্তরের আইনি পদ্ধতিতে আবেদন প্রসেস করতে নিয়োজিত বা লাইসেন্সধারী এজেন্ট না হওয়া সত্ত্বেও সেই দপ্তরের কাজ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণ বা অর্থ গ্রহণের চেষ্টা করা।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আবদুল্লাহ বলেন, নাগরিকদের সেবাদানের পরিধি বৃদ্ধির সঙ্গে টাউটদের দৌরাত্ম্যও বেড়েছে। আইনটি সময়োপযোগী করে যথাযথভাবে প্রয়োগ করলে সেবাগ্রহীতা সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাবে। মানুষের হয়রানি কমবে। এজন্য আইনে শাস্তিও বাড়ানো প্রয়োজন।

পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা - dainik shiksha পাঠ্যবইয়ের কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর কমানোর ধান্দায় মুদ্রাকররা বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ না পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha শিক্ষক শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহে ফের ই-রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম - dainik shiksha ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় - dainik shiksha এসব কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাজ নয় প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো - dainik shiksha প্রাথমিকের দুই ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম বদলে গেলো please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038349628448486