শিক্ষার্থীদের মধ্যে ট্যাব বিতরণে অনিয়ম ও প্রতারণা করায় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির এক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার জামালপুরের নটাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামকে এ নোটিশ দেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারমিস সুলতানা। বুধবার বালিয়াকান্দির ইউএনওর মৌখিক নির্দেশে নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে হবে প্রধান শিক্ষককে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী নবম ও দশম শ্রেণির মেধাক্রমানুযায়ী প্রথম তিনজনকে ট্যাব উপহার দেন। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার বালিয়াকান্দির ৩১ টি মাধ্যমিক পর্যায়ের ১৯২ জন শিক্ষার্থীর হাতে ট্যাব তুলে দেন রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: জিল্লুল হাকিম। সেই নিয়ম অনুযায়ী নটাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ট্যাব পাওয়ার কথা বিজ্ঞান বিভাগের সোনালী আক্তার, সাদিয়া খাতুন ও মানবিক বিভাগের পূর্ণিমা বিশ্বাসের। কিন্তু প্রধান শিক্ষক মেধাক্রমানুযায়ী দ্বিতীয় শিক্ষার্থী সাদিয়া খাতুনকে না দিয়ে বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় রোল আবু হানিফকে ট্যাব প্রদানের তালিকায় নাম দেন। এর ফলে বাদ পড়ে যান মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়া খাতুন।
এই অনিয়মের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এলে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়টি ইউএনওর দৃষ্টিগোচর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ওই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করতে বলেন এবং মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়া খাতুনকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব দ্রুত সময়ের মধ্যে তার হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
সাদিয়া খাতুন বলেন, প্রধান শিক্ষক কয়েক দিন আগে আমার ফোন নম্বর নিয়েছিল। আমি ভেবেছিলাম আমাকে জানাবে। কিন্ত সোমবারে সবাইকে ট্যাব দিলেও আমাকে বলেনি। এ কারণে আমি ট্যাব আনতে যাইনি। আমার পরের ছাত্র আবু হানিফ ট্যাব পেলেও আমার ভাগ্য জোটেনি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালামের মুঠোফোনে জানান, তালিকা তৈরি করার সময় সাদিয়া খাতুন অনুপস্থিত ছিল। এ কারণে আমরা তার পরের ছাত্র আবু হানিফের নাম দিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যার আমাদের ডেকেছিলেন। আমরা আবু হানিফের কাছ থেকে ট্যাব ফিরিয়ে নিয়েছি। ইউএনও স্যারের মাধ্যমে বৃহস্পতিবারে সাদিয়ার হাতে প্রধানমন্ত্রীর ট্যাব তুলে দেব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারমিস সুলতানা বলেন, প্রধান শিক্ষককে সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দিলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ট্যাবটি দ্রুত ফেরত এনে সাদিয়াকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কাজ শুরু করেছেন।
ইউএনও রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামের মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদেবার্তা দিলেও সাড়া মেলেনি।