হবিগঞ্জের মাধবপুরে একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ দখল করে ভবন নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচটির মধ্যে দুটি কক্ষই ঠিকাদারের লোকজন ব্যবহার করছেন। এর ফলে প্রায় ছয় মাস ধরে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি বিদ্যালয়ের বারান্দায় নির্মাণসামগ্রী রাখার কারণে শিক্ষার্থীদের চলাফেরাও বিঘি্নত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে কক্ষ দুটি ভাড়া দিয়েছেন। যদিও তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জানা যায়, মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনতলা একটি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছে ‘মেসার্স হালিম এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের নির্মাণশ্রমিকরা বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষ থাকা ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করছেন। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের বারান্দা মালামাল রাখার কাজে ব্যবহার করছেন। বিদ্যালয়ের কক্ষ ও বারান্দা এভাবে ব্যবহার করতে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
বিদ্যালয়ে ১৪০ জন শিক্ষার্থী। পাঁচটি কক্ষে তাদের পাঠদান চলত। কিন্তু এখন দুটি কক্ষ দখল হয়ে যাওয়ায় পাঠদান বিঘিœত হচ্ছে। দুই শিফটে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা শ্রেণিকক্ষ ও বারান্দা ভাড়া দিইনি। মানবিক কারণে ব্যবহার করতে দিয়েছি। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডে শিক্ষার পরিবেশ কিছুটা বিঘিœত হচ্ছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান বিষয়টি জানেন। তিনি কিছুদিন আগে বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে ঠিকাদারের লোকজনদের শ্রেণিকক্ষ খালি করে দিতে বলে গেলেও ঠিকাদার বিষয়টির গুরুত্ব দিচ্ছেন না।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চৌমুহনী খুর্শেদ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক মিহির চন্দ্র দেব বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করতে দেওয়ার বিষয়ে কমিটির মিটিংয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধান শিক্ষক কীভাবে দিয়েছেন, এ বিষয়ে আমি জানি না।’
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হালিম এন্টারপ্রাইজের মালিক জনিকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি কেবল গতকালই (মঙ্গলবার) জেনেছি। তবে এভাবে নির্মাণসামগ্রী রাখতে পারেন না ঠিকাদার।’