নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের দুই নেতাসহ বাংলাদেশে মানবাধিকার কর্মী ও সুশীল সমাজের নেতাদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক। এসব ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের ওয়েবসাইটে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, ড. ইউনূস প্রায় এক দশক ধরে হয়রানি ও ভয়ভীতির শিকার হয়েছেন। তিনি বর্তমানে দুটি বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। যার একটি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ও অন্যটি দুর্নীতির অভিযোগে। যদিও ড. ইউনূস আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন।
‘আমরা উদ্বিগ্ন এ জন্য যে, ড. ইউনূস বিরুদ্ধে অপপ্রচার প্রায়ই সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে করা হয় এবং এতে তার আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’
ভলকার তুর্ক বলেন, অধিকার সংগঠন এর নেতা আদিলুর রহমান খান ও নাসিরউদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে মামলা জাতিসংঘ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, যেগুলোর রায় ৭ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সঙ্গে ১০ বছর আগের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, সুশীল সমাজের নেতারা, মানবাধিকার কর্মী ও ভিন্নমতাবলম্বীদের আইনি প্রক্রিয়ায় হয়রানি বাংলাদেশের নাগরিক ও গণতন্ত্রের জন্য উদ্বেগজনক লক্ষণ। এসব মামলা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।
এই মামলাগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে এই মামলাগুলোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যালোচনা নিশ্চিতের আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
একই সঙ্গে মানুষের কল্যাণ ও সুরক্ষায় মানবাধিকার কর্মী এবং অন্যান্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য একটি নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ভলকার তুর্ক।
হাইকমিশনার আরও বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সংসদে উপস্থাপিত নতুন সাইবার সিকিউরিটি আইনটিও আমরা নিবিড়ভাবে অধ্যয়ন করছি। নতুন আইনটিতে কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানা রাখা হয়েছে ও বেশ কয়েকটি অপরাধের জন্য জামিনের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আটকাতে আইনের স্বেচ্ছাচারী ব্যবহার রোধ করতে সব উদ্বেগের সমাধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।