গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ১১০০ কোটি টাকার কর ফাঁকি ও আয়কর সংক্রান্ত ১৩ মামলা শুনানি জন্য হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এসব মামলার শুনানি হবে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নির্দেশক্রমে মঙ্গলবার ড.ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলার নথিসমূহ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে হাইকোর্টের এই বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। বুধবার বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলাগুলো উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
ড. ইউনূসের আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে সোমবার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা ১৩ মামলার শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। পরে বিচারপতি ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের দ্বৈত বেঞ্চ থেকে মামলার নথিসমূহ প্রধান বিচারপতির দপ্তরে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হয়েছিল।
অপারগতা প্রকাশের বিষয়ে হাইেকার্ট বেঞ্চ জানান, বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান এই (ড. ইউনূসের কর ফাঁকি) মামলায় বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেছিলেন। কাজেই তারা এটি শুনতে পারবেন না।
গত ৭ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষ থেকে হাইকোর্টকে জানানো হয় ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে ১১০০ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন ড. ইউনূস। এর মধ্যে মধ্যে একটি গ্রামীণ কল্যাণের ৫৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। গ্রামীণ কল্যাণের আরেকটিতে ৩৫৪ কোটি ৭৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫৪৭ টাকা এবং গ্রামীণ টেলিকমের একটিতে ড. ইউনূসের কাছে সরকারের পাওনা ২১৫ কোটি টাকা।
এর আগে ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ১১০০ কোটি টাকার আয়কর রিটার্নের মামলা চালুর জন্য হাইকোর্টে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
নোবেল বিজয়ী এ অর্থনীতিবিদের ব্যক্তিগত এবং তার প্রতিষ্ঠিত ৯টি প্রতিষ্ঠানের কর সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছিল দুদক। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনবিআরের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সংশ্লিষ্ট সার্কেল এবং জরিপ দপ্তরকে মৌখিক নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে ড. ইউনূসের কর ফাঁকি ও আয়কর সংক্রান্ত ১২টি মামলা হাইকোর্টে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
গত ৯ মে এসব মামলা দ্রুত শুনানির জন্য হাইকোর্টের এই বেঞ্চে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর ধারাবাহিকতায় গত সোমবার বিষয়টি শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আসে।