গ্র্যাজুয়েট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ তথা বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি (অনার্স) কোর্স চার বছর এবং ডিগ্রি (পাস) কোর্স তিন বছর চালু হওয়ার কারণে ডিগ্রি (পাস) কোর্সে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমাম্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।
ডিগ্রি (পাস) কোর্সকে অর্থবহ করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানেরর স্ব-অর্থায়নে, সরকারি-বেসরকারি, বৈদেশিক বা আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে ক্লাসে পাঠদান বৈশ্বিক সমসাময়িক করার ক্ষেত্রে স্মার্ট ক্লাসরুম ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন; স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার লক্ষ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাজিরা, আর্থিক লেনদেন, ভর্তি প্রক্রিয়া, পরীক্ষার ফলাফলসহ যাবতীয় অফিসিয়াল কার্যক্রম কাগজে-কলমে নয় অনলাইনভিত্তিক এমআইএস (ম্যানেসমেন্ট ইনফরমেসান সিস্টেম) চালু; শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিল্প সংযোগ প্রতিষ্ঠা; শিক্ষার্থীদের আইসিটি দক্ষতা ও আন্তর্জাতিক ভাষা দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যথাক্রমে আইসিটি ল্যাব এবং ল্যাংগুয়েজ ল্যাব প্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষার্থীদের যৎসামান্য ফি-এর মাধামে আবাসন ও যাতায়ত সুবিধাসহ নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।
সর্বোপরি ডিগ্রি (পাস) কোস গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারকে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা অতি জরুরি প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ১. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোকে জাতীয়করণ করার পাশাপাশি নৈতিক গুণসম্পন্ন ও মেধাবীদেরকে ‘শিক্ষক পেশায়’ আকৃষ্ট এবং মর্যদাবান করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র ও উন্নততর স্কেল প্রদান। ২. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কোর্সে নোট-গাইডের ব্যবসা রহিতকরণ। ৩. ক্লাসে পাঠদান সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষার জন্য জেলা শহরে আলাদা কেন্দ্র স্থাপন এবং পরীক্ষায় নকল মূলোৎপাটনসহ সকল ধরনের প্রহসনমূলক কর্মকাণ্ড রোধকরণ। ৪. শিক্ষক গ্রুপিং, ছাত্র-শিক্ষক লেজুরভিত্তিক রাজনীতি এবং র্যাগিং মুক্ত ক্যাম্পাপাস নিশ্চিতকরণ। ৫. অত্যাধুনিক বিজ্ঞানাগার স্থাপনসহ নিয়মিত ব্যবহারিক ক্লাস নিশ্চিতকরণ লক্ষ্যে বিজ্ঞান শিক্ষকদের অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা চালুকরণ।
লেখক: ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, চান্দিনা রেদোয়ান আহ্মেদ কলেজ